‘সমালোচনার বাক্স নিয়ে বসে থাকা বিএনপি জনগণের পাশে নেই’
১১ জুলাই ২০২০ ১৭:৩৩
ঢাকা: করোনাভাইরাস মহামারির সময় সমালোচনার বাক্স নিয়ে বসে থাকা বিএনপি ও এমন অনেকেই জনগণের পাশে নেই বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘বিবেকহীন অন্ধ সমালোচনা পরিহার করে আসুন সরকারের সঙ্গে জনগণের জন্য কাজ করুন।’
শনিবার (১১ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে করোনা পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের মাঝে সহায়তা চেক বিতরণ করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ও বিশ্বের শীর্ষ পত্রপত্রিকা যেখানে করোনা মোকাবিলায় সরকারের সক্ষমতা ও পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেছে, সেখানে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা প্রতিদিন যে ভাষায় শুধু সমালোচনাই করে যাচ্ছেন, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে প্রতিদিন গণমাধ্যমে উঁকি দিয়ে সমালোচনা করে বিএনপি নিজেদের জনগণের কাছে হাস্যকর করে তুলছে।’
‘দেশে বহু এনজিও আছে যারা বিদেশি অর্থ পায়, এখন তাদের পাওয়া যাচ্ছে না, কয়টি এনজিও মানুষের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে’, বলেও প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। ড. হাছান বলেন, ‘করোনাদুর্যোগে জনগণকে সহায়তায় সরকার প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিহাসের বৃহত্তম ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। পাশের দেশ ভারতে বিরোধীদলীয় জোটপ্রধান সোনিয়া গান্ধী সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের সাথে একাত্মতা জানিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলো একাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে সাংবাদিকরা করোনাকালে কাজ করছেন, অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন, কয়েকজন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সাংবাদিকরা হাত গুটিয়ে বসে থাকলে মালিকেরা চাইলেও গণমাধ্যম চালু থাকতো না, বলেন তথ্যমন্ত্রী। মানবিক বিবেচনায় সরকার যেমন সাংবাদিকদের সহায়তা করছে, এসময় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের অনেকের সাময়িক কষ্ট হলেও গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ ও চাকুরিচ্যুত না করার জন্য ফের অনুরোধ করেন ড. হাছান মাহমুদ।
গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় সরকারি পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের বকেয়া বিল পরিশোধের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয়ে পত্র ও তাগিদ দেওয়া হয়েছে, যাতে করে সংবাদকর্মীদের বেতন দিতে সুবিধা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা ও করোনা উপসর্গে মৃত্যুবরণকারী সাংবাদিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে ইতোমধ্যে ৩ লাখ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এরপরও পরিবারে কেউ আবেদন করলে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আরও সহায়তা দেওয়া হবে।’
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল। সহায়তাপ্রাপ্ত সাংবাদিক প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতা করেন- আতাউর রহমান জুয়েল ও মোহাম্মদ তারিক আল বান্না। বক্তারা এ সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
এদিন অনুষ্ঠানে ২০০ সাংবাদিককে চেক দেওয়া হয়। এছাড়া চলমান সহায়তার প্রথম পর্বে এ পর্যন্ত ৪৮টি জেলায় সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কাছে এ সহায়তা পৌঁছেছে বলেও জানান ডিইউজে সভাপতি।