ঠাকুরগাঁওয়ে দুর্যোগসহনীয় ঘর নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ
২১ জুলাই ২০২০ ১৯:৪৭
ঠাকুরগাঁও: সরকারের ‘কাবিখা কর্মসূচী’র আওতায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় দুর্যোগসহনীয় ঘর নির্মাণ কাজে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এলাকার মানুষকে দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে গত বছর সরকারি বরাদ্দে এই ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই দেয়াল ও পিলারে দেখা দিয়েছে ফাটল। ফলে দুর্যোগের সময় নিরাপত্তা নয়, বরং এই ঘরগুলোই বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত বাজেট দেয়া হলেও নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে এই ঘরগুলো বানানো হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগসহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৩৬টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটি ঘর নির্মাণকাজের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৬০ টাকা। নির্মাণ নির্দেশনা অনুযায়ী, মাটির নীচ থেকে ৩ ইঞ্চি সলিং, ৩ ইঞ্চি সিস্টেম কনক্রিট, ১৫ ইঞ্চি-৬ইঞ্চি উচ্চতা গাঁথুনি দিয়ে ভিটি করা, ১৪টি ব্রিফ পিলার, ঘরের চালে মানসম্মত কাঠ ব্যবহার করা, উন্নতমানের ঢেউটিন ০.৪৬মি:লি, ১নং ইট ও উন্নতমানের বালি, ভালো ব্রান্ডের সিমেন্ট, দরজা, জানালা ও বারান্দায় উন্নতমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। বেশিরভাগ ঘরের দেয়াল ও পিলারে এরইমধ্যে ফাটল ধরেছে।
পাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তরপাড়িয়া লোহাগাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী আলেয়া বেগম বলেন, ‘আমার স্বামীর নামে উপজেলা থেকে দুর্যোগসহনীয় ঘর পেয়েছি। বছর যেতে না যেতেই দেয়াল ও পিলার ভেঙ্গে পড়ার অবস্থা। একটু বড় ঝড় হলেই ঘর ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। ঝুঁকি নিয়ে এই ঘরে থাকতে হচ্ছে।’
কাজের মান সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদার বলেন, ‘যেভাবে করতে বলেছে সেভাবেই কাজ করেছি। ভালো-মন্দ জানিনা।’
রায়মহল গ্রামের সাইফুলের মা বলেন, ‘ঘর নির্মাণের জন্য ইট, বালি ও অন্যান্য উপকরণ আনা নেয়ার খরচ ও মিস্ত্রিদের থাকা খাওয়ার খরচ বহন করতে আমাদের গরু বিক্রি করতে হয়েছে। তারপরও এমন ঘর পেয়েছি যে, যখন তখন ভেঙ্গে পড়তে পারে।’
আমজানখোর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আকালু চেয়ারম্যান বলেন, ইউনিয়নে ঘর নির্মাণের বাজেট সম্পর্কে আমি কিছু জানিনা। ইউএনও সাহেব আমার স্বাক্ষর চেয়েছিলেন, দিয়েছি।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. খায়রুল আলম সুমন বলেন, ‘ঘরগুলো নির্মাণের পর কোন সমস্যা হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’
ঠাকুরগাঁও দুর্যোগসহনীয় নির্মাণ প্রকল্প নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতি