ডিজি হেলথ’র বিচার দাবি ফখরুলের
২৩ জুলাই ২০২০ ১৬:১০
ঢাকা: সদ্য পদত্যাগকারী স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি হেলথ) অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের বিচার দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে উত্তরার বাসায় আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক রিজাইন করেছেন এবং শোনা যাচ্ছে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে। আসলে তাকে তো বরখাস্ত করা উচিত ছিল। শুধু স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকই নন, এর সঙ্গে যারা যারা জড়িত আছেন, ভুল তথ্য দিয়েছেন জনগণকে- তার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের ওপর বর্তায়।’
‘আমরা মনে করি শুধু স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের রেজিগনেশন নয়, মহাপরিচালকের বিচার হওয়া উচিত। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। এরই মধ্যে যে দাবি করা হয়েছে, এটা অত্যন্ত যৌক্তিক দাবি’— বলেন বিএনপির মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা এত চরমে পৌঁছেছে যে, কোভিড-১৯’র জন্য ডেডিকেটেড অধিকাংশ হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ নেই। করোনা প্রার্দুভাবের শুরু থেকেই দুর্নীতি শুরু হয়েছে। সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের কাছে করোনা যেন আশীর্বাদরূপে আবির্ভুত হয়েছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী— যেমন পিপিই, মাস্ক, ওষুধ সরবারহ দিয়ে শুরু হয় তাদের এই দুর্নীতি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এসব অনিয়ম কর্তৃপক্ষের এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ কী আদৌ আছে? করোনাকালেও স্বাস্থ্যসুরক্ষার সামগ্রী কেনা-কাটায় দুর্নীতি চরমে। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না। করোনা মহামারির এই সংকটকালে পুরো জাতি যখন ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন, যখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, যখন সরকারি হিসাবেই দৈনিক প্রায় ৪০ জন করে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে, তখন স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শামিল। স্বাস্থ্য খাতের জবাবদিহিতাহীন দুর্নীতির দায় সরকারেরই বহন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুরু থেকে সরকারের সমন্বয়হীনতা, অপরিণামদর্শিতা, সিদ্ধান্তহীনতা, ভুল সিদ্ধান্তের কারণে করোনা সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলো কার্যত অসফল প্রমাণিত হয়েছে। শুধুমাত্র সরকার দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এই মহামারিকে মোকাবিলার করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলেই আজকে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। জাতির এই মহাদুযোর্গ তাদের পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’
করোনাকালে দলের কার্যক্রম তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সীমিত সাধ্য ও ক্ষমতার মধ্য দিয়ে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন-সহযোগী সংগঠনগুলো করোনা মোকাবিলার জন্য মাঠে আছে এবং তারা যথেষ্ট কাজও করেছে।’
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ২৮০ পরিবারের মাঝে বিএনপি ত্রাণ বিতরণ করেছে। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) করোনার শুরু থেকে জনসচেতনতামূলক প্রচারণাসহ চিকিৎসা সেবার কাজ করে যাচ্ছে। জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন ত্রাণের কাজ করে যাচ্ছে।
ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে করোনা সম্পর্কিত জাতীয় পর্যবেক্ষণ সেলের সমন্বয়ক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের হারুন আল রশিদ, আবদুস সালাম, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল ও ছাত্রদলের ইকবাল হোসেন শ্যামল যুক্ত ছিলেন।
অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ ডিজি হেলথ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপি বিচার দাবি