Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৬ বছরেও শেষ হয়নি হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার বিচার কাজ


১২ আগস্ট ২০২০ ১৪:০৪

ঢাকা: দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পরও রায় ঘোষণা হয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার। মামলাটি রায় পর্যায়ে এসে বিচার কাজে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস।

জানা গেছে, মামলাটিতে ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে ৪১ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। বর্তমানে এ হত্যা মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। আত্মপক্ষ সমর্থনের পর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। আর এটা শেষ হলেই রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করতে পারবেন আদালত। অন্যদিকে বিস্ফোরক দ্রব্যের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য অপেক্ষমান রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে মামলা দুটি ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। মামলা দুটির পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য গত ২১ মার্চ দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের জন্য বর্তমানে মামলার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের সেরেস্তাদার আব্দুর রশিদ সারাবাংলাকে জানান, ‘এতদিনে হত্যা মামলাটির রায় হয়ে যেত। সেই সঙ্গে বিস্ফোরক দ্রব্যের আইনের মামলাটায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ পর্যায়ে চলে যেত। কিন্তু করোনার কারণে হুমায়ুন আজাদসহ সকল পুরাতন মামলার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে আছে।’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহফুজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যার অভিযোগে দণ্ডবিধির ধারায় যে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে সেটি শেষ পর্যায়ে চলে এসেছিল। অন্যদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলাটিও সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে সব কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না পর্যন্ত আদালতের কার্যক্রম কবে শুরু হচ্ছে তা বলা যাচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও জানান, ‘কিছুদিন আগে ভার্চুয়াল কোর্টে দুই আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। বিচারক শুনানি শেষে তা না মঞ্জুর করেন।’

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একুশে গ্রন্থমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হয়ে মারাত্মক আহত হন ড. হুমায়ুন আজাদ। হামলার সময় তাকে চাপাতি ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ওই হামলার পর হুমায়ুন আজাদ ২২ দিন সিএমএইচে এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে জার্মানির মিউনিখে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একই বছরের ১২ আগস্ট তিনি মারা যান।

ওই ঘটনায় পরদিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন। পরে তা হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। এছাড়া একই ঘটনায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনেও অপর একটি মামলা হয়।

২০০৯ সালের ৬ অক্টোবর এই মামলার বাদী মো. মঞ্জুর কবির মামলাটির বর্ধিত তদন্তের আবেদন করলে ওই বছরের ২০ অক্টোবর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন। বিভিন্ন সময় মামলাটি তদন্ত করেছেন রমনা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, সিআইডির পুলিশ ইন্সপেক্টর কাজী আব্দুল মালেক, মোস্তাফিজুর রহমান ও লুৎফর রহমান।

২০১০ সালের ১৮ অক্টোবর আসামি আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এ মামলায় দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে পাঁচ দফায় বিভিন্ন মেয়াদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে শেষ পর্যন্ত এ মামলার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল ওই মামলার তদন্ত শেষে সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ওই পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

এর আগে, ২০০৭ সালের ১১ নভেম্বর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে একটি চার্জশিট দাখিল করেন। ওই চার্জশিটে আবুল আব্বাস ভূইয়া ও গোলাম মোস্তফা নামের দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যহতি দেওয়া হয়। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলো- জেএমবির সুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শাউন, আনোয়ার আলম, হাফিজ মাহমুদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু।

আসামিদের মধ্যে সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু (পলাতক) এবং হাফিজ মাহমুদ মারা গেছেন।

১৬ বছর করোনা বিচার হুয়ায়ুন আজাদ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর