Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স


২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১৬

ঢাকা: নতুন অর্থবছরের (২০২০-২১) দ্বিতীয় মাস আগস্টে প্রবাসীরা ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় (এক ডলার ৮৫ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ১৬ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা এক মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর ঠিক আগের মাস জুলাইয়েই ইতিহাসের সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে।

মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, জুনে ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার ও মে মাসে ১৭৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে, যা ইতিহাসের যথাক্রমে তৃতীয় ও চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে প্রবাসীরা ১৯৬ কোটি ৩৯ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫১ কোটি ৯২ লাখ ডলার বা ২৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেশি। ২০১৯ সালের আগস্ট মাসে ১৪৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। তবে এ বছরের আগস্টের এই রেমিট্যান্স এর আগের মাস জুলাইয়ের তুলনায় ৬৩ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার কম।

আরও পড়ুন-

টানা তৃতীয় মাসে রেমিট্যান্স-রিজার্ভে নতুন রেকর্ড

এদিকে গত মে, জুন, জুলাই ও আগস্ট— এই চার মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড রেমিট্যান্স পাঠানোর কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। সবশেষ মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। এ নিয়ে গত তিন মাসে ছয় বার রিজার্ভ নতুন উচ্চতায় উন্নীত হলো। এর আগে গত ৪ জুন প্রথমবারের ৩৪ বিলিয়ন, গত ২৪ জুন ৩৫ বিলিয়ন ডলার, ৩০ জুন ৩৬ বিলিয়ন ডলার, ২৮ জুলাই ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ১৮ আগস্ট ৩৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয় রিজার্ভ। এর আগের রেকর্ড তিন বছরের পুরনো— ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের। ওই সময় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। রেমিট্যান্সের ওপর সরকারের ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। হুন্ডি বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে।

তবে রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ বাড়লেও তাতে স্বস্তি দেখছেন না সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, রেমিট্যান্স বাড়ার পেছনে প্রধান কারণ হলো অনেক প্রবাসীকে করোনার কারণে দেশে ফিরে আসতে হতে পারে। এ কারণে প্রবাসীরা দেশে আসার আগে তাদের সঞ্চিত সব টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছেন। ফলে রেমিট্যান্স বেড়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয় কমেছে। করোনা সংকট মোকাবিলায় দাতা সংস্থাগুলোর ঋণ-অনুদান পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে, বাড়ছে। তবে বর্ধিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

অর্থবছরভিত্তিক রেমিট্যান্স

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১ হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৬৩১ কোটি  মার্কিন ডলার। এছাড়া, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে এসেছিল ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।

পঞ্জিকা বছরের হিসাবে, ২০১৯ সালে রেকর্ড ১ হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। ২০১৮ সালে দেশে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এর আগে, ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি মার্কিন ডলার, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি মার্কিন ডলার, ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।

উল্লেখ্য বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রাখছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ যথাক্রমে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ওমান, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, সিঙ্গাপুর ও ইতালি।

বাংলাদেশ ব্যাংক রেকর্ড রেমিট্যান্স রেমিট্যান্স রেমিট্যান্স প্রবাহ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর