ইউএনও’র ওপর হামলা: আসাদুল ৭ দিনের রিমান্ডে
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:২২
দিনাজপুর: ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি আসাদুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে দিনাজপুরের আমলি আদালত-৭-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুজ্জামান সরকারের আদালতে আসামি আসাদুল হককে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম আবু জাফর আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার প্রধান আসামি আসাদুল হক শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ কারণে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে হাজির করা সম্ভব হয়নি বলে আদালতকে জানান মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা।
এর আগে, শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) ভোর ৪টার দিকে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত আসাদুলকে হিলি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অসুস্থ থাকায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোববার বিকেল ৫টায় পুলিশ তাকে আদালতে হাজির করে।
এদিকে, দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবন ‘শাপলা’য় আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। জানা গিয়েছিল, ওই বাসভবনে ১০ জন আনসার মোতায়েন করা হবে। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে চার জন আনসার সদস্যকে মোতায়েন দেখা গেছে।
গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে নিজে সরকারি বাসভবনে দুর্বত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ঘোড়াঘাট থানার ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওমর আলী। ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হলেও তার বাবা চিকিৎসাধীন আছেন রংপুরে। হেলিকপ্টারে করে ঢাকা আনার পর বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াহিদার শরীরে আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। ওই রাতেই তার জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এ ঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ আহমেদ বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াঘাট থানার একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধান আসামি আসাদুল হককে (৩৬) হিলি সীমান্তের কালিগঞ্জ এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোরে গ্রেফতার করে। এর আগে ঘোড়াঘাট থেকে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম (৪২) (আটকের পর বহিষ্কৃত) ও মাসুদ রানা (৩৪) নামে আরও দু’জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরে প্রধান আসামি আসাদুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুরে ঘোড়াঘাট থেকে মূল পরিকল্পনাকারী রঙমিস্ত্রি নবীরুল ইসলাম (৩২) এবং বিকেকে গোবিন্দগঞ্জ থেকে হরিজন সম্প্রসায়ের সান্টু কুমার বিশ্বাসকে আটক করে র্যাব। শুক্রবার সন্ধা ৭টায় র্যাব-১৩ সদর দফতর রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আসাদুল স্বীকার করেছেন যে চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলা চালায় তিন জন। পরে যুবলীগের জাহাঙ্গীর আলমকে ছেড়ে দেয় র্যাব।
এদিকে, ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে শনিবার সন্ধ্যায় পৃথক পৃথকভাবে আরও তিন জনকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন— ঘোড়াঘাট উপজেলা সদর ওসমানপুর সাগরপুর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আশরাফুল ইসলাম ওরফে শাওন (৩৯), চক বামনিয়া বিশ্বনাথপুর এলাকার ধারেন দাশের ছেলে শ্যামল দাস (৩০) ও একই এলাকার মৃত তৌমুদ্দিনের ছেলে ইউএনও কার্যালয়ের মালী মো. সুলতান (৩১)।
আদালতে হাজির আসাদুল হক ইউএনও ওয়াহিদা ইউএনও’র ওপর হামলা প্রধান আসামি রিমান্ড আবেদন রিমান্ড মঞ্জুর