এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও রুশ হ্যাকারদের হানা!
১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৪৯ | আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:৩০
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হ্যাকারদের হানা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনার ঝড় এখনো বয়ে যায়। এরই মধ্যে এবার মার্কিন টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট জানাচ্ছে, আসছে মার্কিন নির্বাচন নিয়েও তৎপরতা শুরু হয়েছে রাশিয়ার হ্যাকারদের। শুধু তাই নয়, তাদের সঙ্গে তৎপর চীন ও ইরানের হ্যাকাররাও। নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন/সংস্থার ওপর নজরদারি করছেন তারা, চেষ্টা করছেন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং বিভিন্ন ব্যক্তির অনলাইন অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে নিতে।
বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে এ খবর দিয়েছে বিবিসি। এক বিবৃতির মাধ্যমে টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট হ্যাকারদের এই তৎপরতার কথা তুলে ধরেছে।
মাইক্রোসফট বলছে, ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হ্যাকারদের যে দলটি ডেমোক্রেটিক দলের নির্বাচনি প্রচারণা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন নথি হাতিয়ে নিয়েছিল, সেই একই হ্যাকার দল এবারও তৎপর। স্পষ্টতই তারা নির্বাচন সামনে রেখে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের নির্বাচনি শিবিরকে লক্ষ্য করে তাদের জোর তৎপরতা চলছে।
আরও পড়ুন-
- মুয়েলার প্রতিবেদনে যা আছে
- মুয়েলারের তদন্ত ‘পক্ষপাতদুষ্ট’: ট্রাম্প
- মুয়েলারের তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা চালিয়েছিলেন ট্রাম্প
- রাশিয়ার সঙ্গে আঁতাত ছিলো না ট্রাম্পের: মুয়েলার প্রতিবেদন
- মুয়েলার তদন্ত গ্রহণ করতে প্রস্তুত মার্কিন বিচার বিভাগ: সিএনএন
বিবৃতিতে মাইক্রোসফট বলছে, স্ট্রনটিয়াম গ্রুপের রাশিয়ান হ্যাকাররা দুই শতাধিক সংস্থাকে লক্ষ্য করে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে অনেক সংস্থাই ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দলের সঙ্গে যুক্ত।
মাইক্রোসফটের কাস্টমার সিকিউরিটি অ্যান্ড ট্রাস্ট বিভাগের প্রধান ভাইস প্রেসিডেন্ট টম বার্ট বলেন, ২০১৬ সালের মতো করেই স্ট্রনটিয়াম গ্রুপের হ্যাকাররা বিভিন্ন মানুষের লগ-ইন তথ্য (বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশের আইডি-পাসওয়ার্ড) হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কিংবা সরাসরি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে নিচ্ছে। গোপন তথ্য সংগ্রহের অংশ হিসেবে বা নির্বাচনি কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে তারা এটি করছে।
মাইক্রোসফট আরও জানিয়েছে, রাশিয়ান হ্যাকারদের বাইরে চীনা হ্যাকাররা জো বাইডেনের নির্বাচনি প্রচারণা শিবিরকে লক্ষ্য করে এবং ইরানের হ্যাকাররা ট্রাম্পের নির্বাচনি প্রচারণা শিবিরকে লক্ষ্য করে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, নির্বাচন পরিচালনায় ভোটগ্রহণের সঙ্গে যুক্তদের লক্ষ্য করেও কিছু হ্যাকিং প্রচেষ্টা পরিচালিত হয়েছে। তবে এসব প্রচেষ্টা বেশিরভাগ সময়ই সফল হয়নি বলেও দাবি মাইক্রোসফটের।
কী ঘটেছিল ২০১৬ সালে?
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য বলছে, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের অবস্থান খর্ব করার জন্য রাশিয়ার হ্যাকাররা সাইবার হামলা চালিয়েছিল। সরাসরি রাশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এসব হামলায় মদত দেওয়া হয়েছিল বলে উঠে এসেছে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, নির্বাচনের আগে সাইবার হামলা ছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর ছড়ানো হয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলারের তদন্তে জানা যায়, রাশিয়ান হ্যাকাররা ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা ছাড়াও হিলারির নির্বাচনি প্রচারণার প্রধান জন পডেস্টার ইমেইলের অ্যাকসেস পেয়ে যায়। সেখান থেকে কয়েক হাজার ইমেইল তারা ফাঁস করে দেয়। পরে ফেসবুকও স্বীকার করে, নির্বাচনের সময় রাশিয়া সমর্থিত কনটেন্ট ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যা প্রায় সাড়ে ১২ কোটি মার্কিনির কাছে ফেসবুকের বদৌলতেই পৌঁছে গিয়েছিল।
টপ নিউজ ডোনাল্ড ট্রাম্প নথি ফাঁস মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন-২০২০ রাশিয়ার হ্যাকার রুশ হ্যাকার হ্যাকিং তৎপরতা