Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘৫০০ টাকার ড্রেস সাড়ে ৩ হাজারে বেচছে ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজ’


২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৮:২৬

ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজে ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদেরকে নিজেদের প্রতিষ্ঠান থেকে ড্রেস কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ‘৫ শ টাকার ড্রেস ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তা না হলে ভর্তির মূল অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।’

রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে একজন অভিভাবক বলছেন, এই ড্রেস আমাদেরকে কলেজ থেকে কিনতে হবে কেন? নিউ মার্কেটে এই একখণ্ড কাপড় আর সাদা কেডস পাঁচশ টাকায় কেনা যায়, অথছ এখানে আমার সন্তানের জন্য ৩ হাজার ৮০০ টাকা দিয়ে এটি কিনতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে কিনেছি। কারণ ড্রেস না কিনলে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের এমন জিম্মি করে ব্যবসা করছে ধানমন্ডি আইডিয়াল। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আচরণ এমন হতে পারে না।

বিজ্ঞাপন

আরেকজন অভিভাবক বলছেন, আমরা এতটাই অসহায় যে সন্তানদের ভর্তি করানোর জন্য এসব ঘটনার প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারি না। কারণ কিছু বললে পরে সন্তানের শিক্ষার ওপর প্রভাব পড়তে পারে। আমাদের কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কাপড় কিনতে হবে? ধানমন্ডি আইডিয়াল কি কাপড় আর জুতার দোকান নাকি? তাহলে কলেজের নামের পাশে ব্র্যাকেটে ‘এখানে কাপড় ও জুতা বিক্রি করা হয়’ লিখে দিলেই পারে।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে কলেজটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজ ভবনের একটি কক্ষে ড্রেস বিক্রি করছে কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মচারী। ভর্তি হতে এখান থেকে ড্রেস কিনতে হয় প্রথমে। ড্রেস কিনলে কলজের লোগো সম্বলিত একটি রশিদ দেওয়া হয়, যেখানে লেখা রয়েছে ভর্তির অনুমতিপত্র। দেওয়া হয় একটি সিকিউরিটি কোডও। এই কোড দেখিয়েই ভর্তি হতে হয় শিক্ষার্থীদের। অর্থাৎ এখান থেকে ড্রেস না কিনলে ধানমন্ডি আইডিয়ালে ভর্তির অনুমতিই পায় না শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে ড্রেস বিক্রি করছেন এমন একজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি সরে পড়েন। অন্যরাও কোনো কথা বলতে রাজি হননি। কলেজটির অধ্যক্ষ জসিম উদ্দীন আহমেদ সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এর সঙ্গে কলেজ জড়িত নয়। আমি এসবের কিছুই জানি না।’ পরে তিনি বলেন, ‘এই কাপড় কলেজ বিক্রি করছে না। কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা মিলে তাদের সমিতি থেকে কাজটি করছেন। এরা কোনো শিক্ষার্থীকেই ড্রেস কিনতে বাধ্য করছে না।’

পরক্ষণেই তিনি ব্যবসায়ী শিক্ষকদের হয়ে ‘সাফাই’ গাইতে শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘সাড়ে ৩ হাজার টাকায় ড্রেস আর জুতা দেওয়া হচ্ছে, এটা ব্যবসা হবে কেন? এরা যথেষ্ট মানসম্পন্ন পণ্য বিক্রি করছে। এটা ঢাকার সব কলেজই করছে বলে তিনি প্রতিবেদকের সঙ্গে রেগে উঠেন।’

এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার অফিসে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বলেন। তিনি বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ আমরা এখনো পাইনি। বিষয়টি আমরা অবশ্যই তদন্ত করে দেখবো। কারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। এটা আমাদেরকে ভুলে গেলে চলবে না। আপনি আমার অফিসে আসুন এ ব্যপারে বিস্তারিত আলাপ করা যাবে।’

উল্লেখ্য, একাদশ শ্রেণিতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু হয়। তিন দফা সময় বাড়ানোর পর এই ভর্তি কার্যক্রম শেষ হবে ২২ সেপ্টেম্বর। এবছর এখনো পর্যন্ত সাড়ে ১৩ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হচ্ছে বলে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

আইডিয়াল কলেজ ড্রেস বাধ্যকরা হচ্ছে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর