দেলোয়ারের মাছের খামার থেকে গুলি-ককটেল উদ্ধার
৫ অক্টোবর ২০২০ ২৩:১১
ঢাকা: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে বর্বরোচিত নির্যাতনের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত দেলোয়ারের মাছের খামার থেকে সাতটি তাজা ককটেল ও ১২ বোরের দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করেছে র্যাব।
সোমবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় র্যাব-১১-এর একটি আভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে এসব ককটেল ও গুলি উদ্ধার করে। র্যাব-১১ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আবু সালেহ এ তথ্য সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
এএসপি আবু সালেহ বলেন, গ্রেফতার দেলেয়ারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেগমগঞ্জে তার মাছের খামার থেকে সাতটি তাজা ককটেলসহ দুই রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করে ওই মামলায় এসব জব্দ দেখানো হবে।
এ সম্পর্কিত আরও খবর-
- গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: দেলোয়ার ও বাদল গ্রেফতার
- গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনে জড়িত ৯ জন চিহ্নিত, গ্রেফতার ৪
- নোয়াখালীতে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বখাটেদের মারধর, গ্রেফতার এক
- বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে নির্যাতন: গ্রেফতার ২ আসামি ৬ দিনের রিমান্ডে
- ‘শারীরিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় বেগমগঞ্জের গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি’
রোববার (৪ অক্টোবর) গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে বর্বরোচিত নির্যাতনের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এরপরই র্যাব গোয়েন্দারা অনুসন্ধান চালাতে থাকেন। পরে র্যাব-১১-এর একটি আভিযান দল রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডে বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় বেগমগঞ্জের সন্ত্রাসী দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান ও গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত দেলোয়ারকে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়।
রোববার ভাইরাল হয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই গৃহবধূকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে তার মুখমণ্ডলে উপুর্যপুরি লাথি মারছে দুর্বৃত্তরা। ভিডিওধারণের সময় গৃহবধূ বখাটেদের বহুবার পায়ে ধরে কাকুতি-মিনতি করেছেন। তিনি দুর্বৃত্তদের বারবার বাবা-বাবা বলে ডাকলেও তারা ভিডিওধারণ বন্ধ রাখেনি। জঘন্য ও নারকীয় কায়দায় ওই গৃহবধূকে তারা নির্যাতন করতে থাকে। শুধু তাই নয়, ধারণ করা ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়া হবে এবং লাইভ করতে হবে বলেও ওই সময় একে অন্যকে জানায় নির্যাতকরা।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বিয়ে হয় তিন বছর আগে। পরে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করলে তিনি বাবার বাড়িতে থাকতেন। স্বামীর সঙ্গে অনেকদিন হলো যোগাযোগও নেই তার। এর মধ্যে গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। পরে রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার কথিত বাহিনী নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করে, তার বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ এনে মারধর ও ধর্ষণচেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে তাকে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র করে ওই অবস্থার ভিডিও ধারণ করে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
ঘটনাটি সেপ্টেম্বর মাসের হলেও গতকাল ভিডিও প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। নোয়াখালী পুলিশ অনুসন্ধান চালিয়ে ওই ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে রাতেই নির্যাতন ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সাত জনের নাম উল্লেখ এবং আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাত উল্লেখ করে দু’টি মামলা দায়ের করা হয়।
এ ঘটনায় দেলোয়ার ও বাদলকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়া নোয়াখালী পুলিশ গ্রেফতার করেছে আবদুর রহিম ও রহমত উল্লাকে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় জড়িত মোট ৯ জনকে চিহ্নিত করেছেন তারা।