আইনের প্রয়োগ না থাকলে ধর্ষণ বন্ধ হবে না: গয়েশ্বর
১২ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৪১
ঢাকা: আইনের প্রয়োগ না থাকলে ধর্ষণ বন্ধ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সোমবার (১২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এ সভা আয়োজ করে।
মন্ত্রিসভায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার আইন নীতিগত অনুমোদন প্রসঙ্গে গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, ‘এই যে জঘন্য অপরাধের শাস্তি যদি মৃত্যুদণ্ড হয় তাহলে কি কালকে থেকে এই অপকর্ম বন্ধ হয়ে যাবে? বন্ধ হবে না।’
‘আইন কাগজের মধ্যে থাকলে চলবে না, আইনের প্রয়োগ থাকতে হবে। প্রশাসনকে জনগণের পক্ষে থাকতে হবে, আইনের দৃষ্টিতে জনগণকে সুরক্ষা দিতে হবে, জনগণের পাশে থাকতে হবে। অর্থাৎ বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে’— বলেন গয়েশ্বরচন্দ্র রায়
তিনি বলেন, ‘ক্রিমিনাল কোর্ডে লেখা আছে- কতটুকু অপরাধের জন্য কতটুকু শাস্তি। আইনের শাসন থাকলে আমরা সেই ক্রিমিনাল কোড প্রয়োগ করতে পারি। আইনের শাসন নাই বলেই প্রশাসনের জবাবদিহিতা নাই, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নাই। বিচার বিভাগ স্বাধীন সংবাদপত্রের মতো, কিন্তু বিচারকরা স্বাধীন না। এসকে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় তাকে কীভাবে দেশ ছেড়ে যেতে হলো, দেশবাসী তা দেখেছে।’
গয়েশ্বরচন্দ্র বলেন, ‘কিছু যদি চান তাহলে কিছু করার দরকার নাই। দেশের জন্য যদি চান, জনগণের জন্য যদি চান, এই অন্যায় (নারী ধর্ষণ-নির্যাতন) যদি বন্ধ করতে চান। তাহলে চিৎকার দিয়ে বলুন- স্টপ জেনোসাইড। স্টপ জেনোসাইড মানে, আমার মা-বোন-শিশু যে যেখানে আছে তাদেরকে আমি নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা দিতে চাই। এর চেয়ে বড় পাওয়ার কিছু নাই।’
তিনি বলেন, ‘আজকে ধর্ষণ শব্দটা শুধু নারী-শিশুর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। গোটা বাংলাদেশটাই তো ধর্ষিত। আমার স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যদি না থাকে, সেটাকে ধর্ষিত রাষ্ট্র বলা যায় না, আমাদের জননী-জন্মভুমি স্বর্গের চেয়ে পবিত্র। সেই পবিত্র জায়গায় যদি হাত পড়ে অপবিত্র হয়, তাহলে ধর্ষিত রাষ্ট্র বলা যায় না।’
গয়েশ্বরচন্দ্র বলেন, ‘গোটা স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ধর্ষিত। একদিকে নারী-শিশু নির্যাতনের মচ্ছব, অন্যদিকে লুটপাটের মচ্ছব, দখলবাজীর মচ্ছব, বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করার মচ্ছব। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
জাসাস মহানগরের আহবায়ক মীর সানাউল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাসাসের সভাপতি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, জাসাস নেতা আহসান উল্লাহ চৌধুরী, রফিকুল ইসলাম, লিয়াকত আলী, শরীফ মাহমুদুল হক, আরিফুর রহমান মোল্লা, জাকির হোসেন রোকন প্রমূখ।