‘নোয়াখালীতে নারীর প্রতি অশুভ ঘটনায় নিজেও লজ্জিত’
২৫ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০৫
ঢাকা: ধর্ষক ও নারী নির্যাতনকারীদের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা চিরদিনের মতো বন্ধ হয়ে যাবে, উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের এলাকা নোয়াখালীতেও কতগুলো অশুভ ঘটনা ঘটে গেছে। নারী ধর্ষণ, নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে গেছে। আমি নিজেও লজ্জিত বোধ করি। নোয়াখালীর মানুষ হিসাবে এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটায়, তারা হল দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তদের দল মত নির্বিশেষে প্রতিরোধ করতে হবে।’
রোববার (২৫ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালীর নিজ নির্বাচনি এলাকার বসুরহাট ও কবিরহাটে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসবে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় শুভেচ্ছা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রকৃত ধর্মানুশীলন মানুষের আত্মার শক্তিকে জাগিয়ে তোলে। ধর্মচর্চা মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে।’ তাই আমি অপরাধ থেকে সুরক্ষা পেতে আত্মিক শক্তি জোরদারে নিজ নিজ ধর্মের মর্মবাণী পাঠ ও চর্চার প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি আরও আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের সম্পর্কে আপনাদের সকলকে সচেতন থাকতে হবে। কোম্পানীগঞ্জ-নোয়াখালীর মানুষ শান্তিপ্রিয়। এখানে যে যার ধর্ম পালন করছে স্বাধীনভাবে। এই সম্প্রীতি কেউ যেন বিনষ্ট করতে না পারে- সেদিকে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।’
‘আপনারা জানেন, শেখ হাসিনার সরকার যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে। ধর্ষণসহ যেকোনো সামাজিক অপরাধের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এবং এসকল ঘৃণ্য অপরাধীকে রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ের পথ বন্ধ করে দিতে হবে।’
‘আমি পরিষ্কার বলে দিতে চাই, এই আমাদের এলাকা নোয়াখালীতেও আজকে কতগুলো অশুভ ঘটনা ঘটে গেছে। নারী ধর্ষণ, নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটে গেছে। আমি নিজেও লজ্জিত বোধ করি। আজকে নোয়াখালীর মানুষ হিসাবে এ ধরনের ঘটনা যারা করে তারা যদি দলীয় পরিচয়েরও হয়, তাদের দলীয় পরিচয় বলে কোনো কিছু নেই। তারা হল দুর্বৃত্ত। এই দুর্বৃত্তদের দল মত নির্বিশেষে প্রতিরোধ করতে হবে। ধর্ষণ, নারী ধর্ষণ এবং এইসব সন্ত্রাস-অপরাধের সঙ্গে যারাই জড়িত হোক, তারা যদি আওয়ামী লীগ দলীয় সহযোগী সংগঠনের দলীয় পরিচয়ের কেউ হোক, তাদেরকেও ক্ষমা করা হবে না।’
‘পরিষ্কার বলে দিতে চাই, ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের সঙ্গে আমার এলাকার যদি আমার পার্টির পরিচয়ে কেউ জড়িত হয়, তার জন্য আওয়ামী লীগ থেকে শুধু তাকে বের করা হবে না, আওয়ামী লীগের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে’-বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
নোয়াখালীতে বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ চলমান আছে উল্লেখ করেন এবং এখনো যেসব কাজ বাকি আছে বর্তমান সরকারের আমলেই তা শেষ করা হবে বলে জানান তিনি। নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য সবকিছুই করা হবে। গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহবান জানান এবং কোনো ধরনের উসকানিমূলক পোস্ট ফেসবুকে না দেওয়ার নির্দেশনা দেন।
সংখ্যালঘু বলে নিজেদের দুর্বল না ভাবার আহবান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প তারাই ছড়িয়েছে যারা আবহমান কাল থেকে এদেশে চর্চিত সম্প্রীতির বীজতলা নষ্ট করেছে। তারা কৃত্রিম সমস্যা তৈরি করে সাম্প্রদায়িক দূরত্ব বাড়িয়ে দিতে চায়। সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দুর্বল হয়েছে কিন্তু নির্মূল হয়নি। তাদের শব্দহীনতা কিংবা আড়ালে থাকা শক্তি সঞ্চয়ের কৌশলও হতে পারে। আসুন আমরা মত ও পথের সমন্বয়ে একটি শান্তি ও স্বস্তির সমাজ বিনির্মাণ করি।’