বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট জালিয়াতি, ঢাকার ব্যবসায়ী গ্রেফতার
২১ নভেম্বর ২০২০ ১৫:৫৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য খালাসের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট খুলে জালিয়াতির অভিযোগে আমদানিকারক ঢাকার এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। এ ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের হওয়া মামলাটি তদন্ত করছে সিআইডি। এ নিয়ে ওই ঘটনায় মোট ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (২১ নভেম্বর) সকালে ঢাকার চকবাজার থেকে মো. জলিল নামে ওই ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিআইডির চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ।
গ্রেফতার মো. জলিল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিয়াম এন্টারপ্রাইজের মালিক, যে প্রতিষ্ঠান চলতি বছরের শুরুর দিকে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি জলপাই আমদানির ঘোষণায় একটি চালান নিয়ে আসে চট্টগ্রাম বন্দরে। কিন্তু গত এপ্রিলে কায়িক পরীক্ষায় ওই চালানে ঘোষণাবর্হিভূত উচ্চশুল্কের ২১ হাজার ৬০ কেজি গুঁড়োদুধ পায় চট্টগ্রাম কাস্টমস।
এরপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে শুল্ক বাবদ ৬৫ লাখ টাকা, শতভাগ জরিমানা বাবদ আরও ৬৬ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা দেওয়ার আদেশ দেয়। এছাড়া আমদানি পণ্যের চালানটি খালাসের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা আমদানি রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতরের ক্লিয়ারেন্স পারমিট কাস্টমসে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ১১ অক্টোবর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিয়াম এন্টারপ্রাইজের পক্ষ থেকে সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি পণ্য ছাড়পত্র সনদ কাস্টমসে দাখিল করে। ১৩ অক্টোবর এ সংক্রান্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি চিঠিও দাখিল করে প্রতিষ্ঠানটি।
কাস্টমসের অডিট এন্ড রিচার্স শাখা যাচাইবাছাই করে দেখতে পায়, পণ্যছাড়ের জন্য জমা দেওয়া ক্লিয়ারেন্স পারমিটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ভুয়া। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে —www.
এরপর গত ২৯ অক্টোবর নগরীর বন্দর থানায় চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারি শুল্ক কর্মকর্তা সুজয় দেবনাথ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকার সিয়াম এন্টারপ্রাইজের মালিক এবং সিঅ্যান্ডএফ প্রতিনিধি চট্টগ্রামের খান এন্টারপ্রাইজের মালিককে মামলায় আসামি করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২২ (২) ও ২৩ (২) এবং দণ্ডবিধির ৪২০, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়।
ওই মামলা তদন্তে নেমে সিআইডি প্রথম দফায় তিনজনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি জালিয়াতির রহস্য উদঘাটন করে। এরপর দুই দফায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
আমদানিকারক ছাড়া গ্রেফতার বাকি পাঁচজন হলেন- সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের মালিক গোলাম মওলা খান ও তার ছোট ভাই গোলাম রসুল খান, ভূয়া ওয়েবসাইট সৃজনকারী আবুল খায়ের পারভেজ এবং খান এন্টারপ্রাইজের লাইসেন্স ব্যবহার করে ওই চালান খালাস কাজে জড়িত আতিকুর রহমান রাসেল ও রাহাত হায়দার চৌধুরী রানা।