ইতিহাস বিকৃতির দায়ে কর্নেল অলির একটি বই বাজেয়াপ্তের নির্দেশ
৮ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:১৭
ঢাকা: লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রমের লেখা ‘রাষ্ট্র বিপ্লব- সামরিক বাহিনীর সদস্যবৃন্দ এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ’ নামে বইটি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই বইয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি লেখার কারণে এই বই বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রমের এক সাক্ষাতকার প্রচারের ঘটনায় বিদেশে থাকা সাংবাদিক কনক সরওয়ারের ইউটিউবে প্রচারিত ওই কনটেন্ট বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এবং এ বিষয়ে রুলও জারি করেছেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারা। আদেশের বিষয়টি সারাবাংলা ডটনেটকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফের রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন।
আইনজীবী মঞ্জুরুল হক জানান, গত ১৭ আগস্টে ইউটিউব চ্যানেলে সাংবাদিক কনক সারওয়ার কর্ণেল অলি আহমেদের সাক্ষাতকার নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি বলেছেন জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট। সেটাকে চ্যালেঞ্জ করেছি। এবং ওনার বইকে নিষিদ্ধ করতে বলেছিলাম। বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক নেগেটিভ (নেতিবাচক) কথাবার্তা আছে। জিয়াউর রহমানকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বলা আছে।
কনক সরওয়ার ইউটিউবে যেসব বিতর্কিত কনটেন্ট দিয়েছে সেগুলো বন্ধ করতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত কনক সরোয়ারের ইউটিউবে প্রচারিত কনটেন্ট অপসারণ করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং কনটেন্ট অপসারণের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানকে স্বাধীন বাংলাদেশের ‘অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি’ হিসেবে উল্লেখ করে ইতিহাস বিকৃত করেছেন অভিযোগ এনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বীর বিক্রমকে আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন আইনজীবী ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ।
ওইদিন ইমতিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আসিফ বলেছিলেন, অলি আহমেদ ১৭ আগস্ট কনক সরওয়ারের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে একটি সাক্ষাৎকার দেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, জিয়াউর রহমান ‘প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি’। অথচ সংবিধানে বঙ্গবন্ধুকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলা হয়েছে এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম উপ রাষ্ট্রপতি। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত এটা নিয়ে কোনো কথা কেউ উত্থাপন করেননি। তাই এ বক্তব্য ইতিহাস বিকৃতি। এ কারণে নোটিশ দিয়েছিলাম।
আজ এসব বিষয়ে শুনানি শেষে আদালত এই আদেশ দেন।