‘আন্তর্জাতিক সড়কে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব নাকচ করেন খালেদা জিয়া’
১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:৩৭
ঢাকা: মিয়ানমার, ভারত ও থাইল্যান্ড— এই তিন দেশ মিলে যৌথভাবে একটি আর্ন্তজাতিক সড়ক উন্নয়ন করছে, যা বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৌশলগত অবস্থানের কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক উন্নয়নের উদ্যোগের সময়ই বাংলাদেশকে এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ওই সময়ে খালেদা জিয়া সরকার প্রস্তাবটি নাকচ করে দিয়েছিল।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। এর আগে বাংলাদেশ-ভারত দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়। শীর্ষ বৈঠকে কী আলোচনা হলো, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সে বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
আরও পড়ুন-
- বঙ্গবন্ধুর বাণী অবিনশ্বর: মোদি
- ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৭ সমঝোতা স্মারক সই
- ‘ঢাকা-নয়াদিল্লি সুসম্পর্ক রাজনৈতিক পরিপক্কতার প্রমাণ দেয়’
- মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে বাংলাদেশ-ভারত
- ‘বাংলাদেশ-ভারতের পারস্পরিক নির্ভরতা আনন্দের সঙ্গে স্বীকৃতি দিই’
- ‘১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্ত হলেও আমরা মুক্ত হয়েছিলাম ১৭ তারিখ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আরেকটি বড় ইস্যু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্থাপন করেছেন— মিয়ানমার-ভারত-থাইল্যান্ড এই তিন দেশ মিলে যৌথভাবে একটি আন্তর্জাতিক সড়ক উন্নয়ন করছে। এই সড়ক উন্নয়নের যখন উদ্যোগ নেওয়া হয়, তখন এতে বাংলাদেশকেও অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন সরকারপ্রধান খালেদা জিয়া এটা নাকচ করে দেয় এই বলে যে এই রোডে তিনি সম্পৃক্ত হতে চান না।’
পারস্পরিক বাণিজ্য বিস্তারসহ বিভিন্ন কারণে ভারতের ত্রিদেশীয় হাইওয়েটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ভারতের মণিপুরের মোরে থেকে থাইল্যান্ডের মা-সত পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে এক হাজার ৩৬০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি। মাঝপথে তা মিয়ানমারে মান্দালে ও রেঙ্গুনকে স্পর্শ করবে। জানা যায়, চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় ত্রিদেশীয় সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে বাংলাদেশকেও এই সড়কে যুক্ত হতে বলা হয়েছিল। তবে সে প্রস্তাব বাংলাদেশ সরকার তখন গ্রহণ করেনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওই সময় মন্ত্রণালয় এটার পক্ষে সারসংক্ষেপ দিয়ে বলেছিল— এই উদ্যোগের সঙ্গে বাংলাদেশের থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ওই সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এককভাবে এটা নাকচ করে দেন। এখন এই রোডটা হয়ে যাচ্ছে। এই রোডটা হলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে, কৌশলগত কারণেও এই রোডটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সময়ের সরকার কী কারণে এটা নাকচ করল! তারা এরকম আরও অনেক উদ্যোগই নাকচ করে দিয়েছে বিভিন্ন অজুহাতে। আপনাদের মনে আছে— সাবমেরিন ক্যাবল সমুদ্রের নিচ দিয়ে আনার প্রকল্পও তখন ওই সরকার নাকচ করেছিল। যাই হোক, আমরা আজকের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এই রোড প্রকল্পে বাংলাদেশকে যুক্ত করার জন্য ভারতকে অনুরোধ করেছি। বাংলাদেশ-ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড— আমরা এই বেল্টে ঢুকতে চাই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ব্রাজিল-রাশিয়া-ভারত-চীন-দক্ষিণ আফ্রিকা এই পাঁচটি দেশ মিলে যে ব্রিক ব্যাংক গঠন করেছে, ভারত আমাদের এখানে যুক্ত হওয়ার আমন্ত্রণ করেছে এবং আমরা রাজি হয়েছি।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে পরিপক্ক হিসেবেও বর্ণনা করে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আন্তর্জাতিক সড়ক খালেদা জিয়া খালেদা জিয়ার নাকচ ত্রিদেশীয় সড়ক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ব্রিফিং মিয়ানমার-থাইল্যান্ড-ভারত সড়ক