Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২০২১ সালে সরকারকে বাধ্য করতে হবে সরে যেতে: ফখরুল


৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:৪৫

ঢাকা: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির নেতৃত্বে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ২০২১ সালে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে সরে যেতে।

বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি এ বিক্ষোভ সভার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ বছর শেষ হচ্ছে। আগামী বছরে আমাদের সকলের সংকল্প হবে, শপথ হবে ঐক্য। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই দানবীয় সরকার, এই স্বৈরতান্ত্রিক সরকার, একনায়কোতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’

তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের এক হতে হবে, ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে আহবান জানাচ্ছি, আসুন, গণতন্ত্রকে উদ্ধারের যে সংগ্রাম— এই সংগ্রাম শুধু বিএনপির একার নয়। সকল রাজনৈতিক দল, সকল মানুষের। ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

সমাবেশে আসার পথে বিভিন্ন স্থানে দলের নেতাকর্মীদের পুলিশি বাধা প্রদান ও গ্রেফতারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের খুব দুঃখ হয়, লজ্জায় হয় যখন দেখি সমাবেশ আসতে বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। যখন দেখি এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে অসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আজকের এই দিনটি হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কময় দিন। ২০১৮ সালের এই দিনে গণতান্ত্রিক চেতনাকে ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে বর্তমান সরকার। এই দিনটি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের।’

ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতায় থেকে বাংলাদেশের সমস্ত অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আমাদের নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে এবং বাংলাদেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে।’

‘আপনারা দেখেছেন মেগা প্রজক্টের নামে মেগা লুট, আপনারা দেখেছেন আমাদের শেয়ারবাজার ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, ব্যাংক-বীমাকে লুট করে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। কোভিড শুরুর পর থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। জীবন-জীবিকার ক্ষেত্রে জনগণকে একটা বিপন্ন অবস্থার মধ্যে নিয়ে এসেছে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কোনোদিনই গণতন্ত্র বিশ্বাস করেনি। তারা সবসময় গণতন্ত্রের বিরোধিতা করেছে। আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার জন্য। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম এই জন্য যে, দেশের মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, সাংবাদিকদের স্বাধীনতা থাকবে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার গোটা দেশটাকে কারাগারে পরিণত করেছে। বাংলাদেশের মানুষগুলোকে শ্বাসরুদ্ধ করে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আজকে এই অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি পেতে হবে, সমগ্র মানুষকে মুক্ত করতে হবে। বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে এই ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্ত করতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে এদেরকে বাধ্য করতে হবে সরে যেতে।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘এই কমিশন সারাদিন মিথ্যা কথা বলে। যে কথাগুলো শুনলে লোকে হাসে। এখন নাকি খুব সুন্দর নির্বাচন হচ্ছে, চমৎকার নির্বাচন হচ্ছে। যেখানে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে না মানুষ। ইভিএম দিয়ে নির্বাচন করে। একখানে দিলে আরেকখানে ভোট পড়ে। ধানের শীষে ভোট দিলে নৌকায় গিয়ে পড়ে- এই অবস্থা তারা (নির্বাচন কমিশন) তৈরি করেছে।’

মহানগর দক্ষিনের সভাপতি যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার ও উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম নকির পরিচালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা শিরিন সুলতানা, আমিনুল হক, মীর সরফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্র দলের ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, রবিউল ইসলাম রবি, আকরামুল হাসান, শেখ রবিউল আলম, খন্দকার আবু আশফাক, অঙ্গসংগঠনের মধ্যে বজলুল বাসিত আনজু, ইউনুস মৃধা, এজিএম শামসুল হক, মামুন হাসান, এসএম জাহাঙ্গীর, ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ মহানগর নেতৃবৃন্দ।

টপ নিউজ বাধ্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সরকার সরে যেতে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর