Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া উচিত’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০২

ঢাকা: জনমনের সংশয়-সন্দেহ দূর এবং জনগণের মধ্যে আস্থা ফেরাতে অন্যান্য দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের মতো রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর উচিত ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেওয়া— এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘করোনা ট্রেস-টেস্ট-ট্রিটমেন্ট নিয়ে কেলেঙ্কারির কারণে ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের ব্যাপারে  সাধারণ মানুষের মনে সংশয় রয়েছে। অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে। সরকার আগে জনগণকে টিকা দিতে চায়। এতে করে গণমানুষের মনে সন্দেহ ঢুকেছে। এই সংশয়-সন্দেহ দূর করার জন্য ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া উচিত।’

তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের আতঙ্ক কাটাতে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনেতারাই এগিয়ে এসে কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। আমেরিকায় প্রকাশ্যে করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গোটা বিষয়টি ক্যামেরাবন্দি করে সরাসরি সম্প্রচার করা হয় সংবাদমাধ্যমে। তাকে দেখে ভ্যাকসিন নিতে এগিয়ে এসেছেন তিন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বিল ক্লিনটন। প্রকাশ্যে ভ্যাকসিন নিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও এবং হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।’

রিজভী বলেন, ‘প্রতিষেধক নিয়ে ব্রিটেনবাসীর সংশয় দূর করতে রাজপ্রাসাদে বসে ভ্যাকসিন নিয়ে নজির গড়েছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এবং তার স্বামী প্রিন্স ফিলিপ। জনগণের সংশয় নিরসন ও উৎসাহী করতে চীনের তৈরি করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।’

বিজ্ঞাপন

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়ে বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন যে নিরাপদ এবং বৈধ, তা নিশ্চিত করতে আমিই প্রথম ডোজ নিলাম।  ভ্যাকসিন নিয়েছেন সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজ ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালিদ আল সাবাহকে প্রথম ডোজ দিয়ে দেশটিতে করোনার ভ্যাকসিনের কর্মসূচি শুরু হয়েছে।’

‘আমি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাবো পৃথিবীর দেশে দেশে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা যেভাবে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়ে মানুষকে আস্থা ও ভরসা দিচ্ছেন ও আশ্বস্ত করছেন আপনারাও সেই পথ অনুসরণ করুন। তাদের মতো আপনারাও সাহসী পদক্ষেপ নিন। আপনারা আগে ভ্যাকসিন নিলে জনগণ ভরসা পাবে। এ ভ্যাকসিন নিতে সাহস পাবে গোটা দেশবাসী। ভ্যাকসিন নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা কাটাতে সহায়ক হবে। অনাগ্রহ কাটিয়ে দেশবাসীকে ভ্যাকসিনে আগ্রহী করে তুলবে। আমরা আশা করব প্রথম ভ্যাকসিন প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করার দৃশ্য সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রচলিত রেওয়াজ হচ্ছে, যখন কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা এবং সেবা দেওয়া হয়, শুরুতেই তা ক্ষমতাসীন ও সরকার সমর্থক প্রভাবশালী লোকজন ভোগ করে থাকে। ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, এমপি, নেতা, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়োর কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী শ্রেণির উচ্চ পর্যায়ের লোকজন সকল সরকারি সুযোগ-সুবিধা ও সেবা সর্বপ্রথম ভোগ করে থাকে। প্রয়োজনে অন্যায় করে, জোর করে এমনকি লুট করে।’

‘কিন্তু করোনার ভ্যাকসিনের বেলায় ভিন্ন ব্যবস্থার কথা সরকারি দলের মন্ত্রীদের মুখে শোনা যাচ্ছে। তারা যখন বলেন, করোনার ভ্যাকসিন সরকারি মন্ত্রী, এমপিরা আগে পাবেন এমন ব্যবস্থা করা হয়নি তখন দেশের মানুষ কনফিউজড হয়ে পড়ে। সরকারের প্রতি আস্থার অভাবের কারণেই মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে কোনো কোনো মন্ত্রী যখন বলেন, বিএনপি চাইলে করোনার ভ্যাকসিন তাদেরকে সবার আগে দেওয়া হবে, তখন এই ভ্যাকসিনে মানুষ গভীর ষড়যন্ত্র খুঁজে পায়। ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে সরকারি মন্ত্রীদের বক্তব্য সতীনের ছেলেকে বাঘ মারতে পাঠানোর মতো’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, “কূটনীতির ‘জোর কিংবা জেরে’ সরকার যে ধরনের ভ্যাকসিনই আমদানি করুক— এটি ‘ভালো কি মন্দ’ সেটি সরকারই ভালো জানে। সুতরাং উপহার পাওয়া ভ্যাকসিন সর্বপ্রথম ‘রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী’ ও মন্ত্রিপরিষদ নিতে পারেন। নিতে পারেন উচ্চপর্যায়ের আমলা ও ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা। তাহলে মানুষের মনে সংশয় নিরসন হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও তাই হয়েছে।”

সারাবাংলা/এজেড/একে

আওয়ামী লীগ বিএনপি ভ্যাকসিন

বিজ্ঞাপন

বিদেশ বিভুঁই। ছবিনামা-১
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২৩:০০

আরো

সম্পর্কিত খবর