Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট অনুমোদন দিল সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:৪৫

ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে র‍্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট ও র‍্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট অনুমোদনের পরামর্শ দেয় বিশেষজ্ঞরা। ১৭ সেপ্টেম্বর দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমোদন দেয় সরকার। এরও প্রায় চার মাস পরে দেশে অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দেওয়া হলো।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

জাহিদ মালেক বলেন, দেশে অনেকদিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেওয়ার। এখন এটা চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। আজ আপনাদের যখন বললাম তখন থেকেই এটা চালু হয়ে গেলো। এখন থেকে সরকার কর্তৃক অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান থেকে দেশের সরকারি ও বেসরকারিভাবে অ্যান্টিবডি টেস্ট করা যাবে

এর আগে ২৪ আগস্ট স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) শনাক্তে অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে সরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবে অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান স্বাস্থ্য মন্ত্রী।

এর আগে ৩ জুন দেশে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটি তাদের সভায় কোভিড-১৯ শনাক্তে র‌্যাপিড টেস্টের জন্য সুপারিশ করে। তারা আরটি পিসিআর (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারেজ রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার পক্ষেও মত দেন।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এখন সেরোসার্ভিল্যান্স নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে, যার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করাও প্রয়োজন। এটা করা গেলে বিশ্ব মহামারি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংক্রমণ পরিস্থিতির একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে। সংক্রমণ বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করা জরুরি। সেরোসার্ভিল্যান্স ছাড়াও অ্যান্টিবডি টেস্টের গুরুত্ব রয়েছে প্লাজমা থেরাপির জন্য।

পরবর্তীতে ১৭ সেপ্টেম্বর কোভিড-১৯ মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কমিটি তাদের সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তখন বলেছিল, বর্তমানে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। কোভিড-১৯ পরীক্ষার পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আরও বেশি শনাক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য একাধিকবার পরামর্শ দেয়।

তিন পদ্ধতিতে (পিসিআর, অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট) কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম পাশাপাশি থাকলে তা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও পরামর্শ দেওয়া হয় জাতীয় কারিগরি কমিটির সভায়।

কোভিড-১৯ ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সম্প্রসারণ নীতিমালা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী সারাবাংলাকে বলেন, অ্যান্টিবডি টেস্টটা হলো সেরো সার্ভিলেন্সের জন্য, এটা কখনোই ডায়াগনস্টিকের জন্য না। অর্থাৎ কারও অতীতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ হয়েছে কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য আমরা এখনো জানি না যে কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রে কতদিন অ্যান্টিবডি থাকতে পারে। হয়তবা শুরু হলে তখন বলা যাবে। কারণ একেক দেশের আবার ভ্যারিয়েশন আছে। কোনো দেশে দেখা যাচ্ছে তিন মাস রিপোর্টেড হচ্ছে, তারপরে সেই গ্রাফ পড়তে থাকে। আর তাই আমাদের দেশের অ্যান্টিবডি কতদিন থাকবে, কারও দ্বিতীয় সংক্রমণ হচ্ছে কি না এগুলো হয়ত তখন জানা যাবে।

তিনি বলেন, এছাড়াও মহামারির সময়ে দেখা যায় উপসর্গহীন ভাবেই অনেকের মাঝে সংক্রমণ ছড়িয়ে পরে। এক্ষেত্রে তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না এটি এই টেস্ট ছাড়া বলা যায় না। তাই এ সময়ে অ্যান্টিবডি টেস্ট খুব জরুরি, নয়তো পরিসংখ্যান সঠিক হবে না।

সারাবাংলা/এসবি/একে

অ্যান্টিবডি কোভিড-১৯ টপ নিউজ নভেল করোনাভাইরাস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর