দেশ উন্নত হওয়ায় ভোট না দেওয়ার মানসিকতা দেখা দিয়েছে: ইসি সচিব
২৭ জানুয়ারি ২০২১ ২০:০৯
ঢাকা: বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশও উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের ভোট না দেওয়ার মনসিকতা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এরকম হয়। আমেরিকার (যুক্তরাষ্ট্র) ক্ষেত্রে দেখুন। এত উন্নত তারা, সবদিক থেকেই উন্নত। কিন্তু দেখবেন ভোট দিতে যায় না বেশিরভাগ মানুষ। আমাদের দেশেও অনেকটা ওই রকম, উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয় এই লক্ষণ দেখা দিয়েছে। দেশ উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানসিকতারও বদল হয়েছে। সবাই মনে করে, অন্যের জন্য আমি কেন কষ্ট করে ভোট দিতে যাব।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বিষয়ে বলেন। এসময় চসিক নির্বাচন ভালো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন- চসিক নির্বাচন: ৪৩ কেন্দ্রে রেজাউল ১৪৫৭৫, শাহাদাত ১২২৭
মো. আলমগীর বলেন, চসিক সিটিতে ভোটার উপস্থিতি একটু কম ছিল। শুধু চট্টগ্রাম নয়, যেকোনো বড় শহরে ভাসমান লোকজন, বাইরের জন্য লোকজন একটু বেশি থাকে। এরকম বড় শহরে ভোটার উপস্থিতি একটু কম হয়। চট্টগ্রামে আমরা আরেকটু বেশি আশা করেছিলাম। দেখা গেছে যে ভোটার উপস্থিতি আশার চেয়ে একটু কমই হয়েছে।
২০০৮ সালের আগের নির্বাচনগুলোয় ভোটার উপস্থিতি বেশি ছিল— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ইসি সচিব বলেন, এখানকার নাগরিকরা কেন যেন রাষ্ট্রের প্রতি তাদের একটা দায়িত্ব যে আছে, ভোট যে তার অধিকার— এটা তারা মনে করছেন না। ভোটের দিন তারা মনে করেন যে কষ্ট করে কেন যাব! ভোট দিয়ে আমার কী লাভ! এরকম এক ধরনের মনমানসিকতা হয়ে গেছে সবার।
নির্বাচনি সহিংসতার বিষয়ে প্রশ্ন করলে মো. আলমগীর বলেন, ভয়ংকর পরিস্থিতি কোথায় হলো? ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র দুইটি কেন্দ্রে ইভিএম ভাঙচুর করা হয়েছে। ইভিএম না ভাঙলে সেখানে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হতো। ইভিএম ভাঙায় সেখানে নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। এছাড়া অন্য কেন্দ্রগুলোতে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হয়েছে। যারা ভোট দিতে এসেছিলেন, তারা ভোট দিয়ে গেছেন।
সহিংসতার পরেও ভোট শান্তিপূর্ণ বলা যায় কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৭৩৫টি কেন্দ্রের মধ্যে দুইটি কেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে। এটাকে কী বলবেন? পারসেন্টেজ করেন কত শতাংশ হয়! শান্তিপূর্ণ কত, আর অশান্তিপূর্ণ কত?
মো. আলমগীর আরও বলেন, ‘আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে এ ধরনের নির্বাচনগুলোতে কিছু ঘটনা ঘটে। তার হিসাবে যদি বলেন, তাহলে বলব যে বরং কমই হয়েছে। মাত্র দু’টি কেন্দ্রে সহিংসতা হয়েছে। যারা দুষ্কৃতিকারী থাকেন, তারা এগুলো করার চেষ্টা করেন। বিশেষ করে ইভিএমে ভোট হলে অনেকেই মনে করেন যে জাল ভোট দেওয়া যাবে না। তারাই সাধারণত এগুলো করে থাকে। কিছু লোক তো থাকেই এরকম। তারপরও আমরা চট্টগ্রামের ভোট সুষ্ঠু করার জন্য প্রায় ২০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য কর্মরত ছিল। কমিশনের পক্ষ থেকে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার, তা নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন-
- ভোট দিলেন নওফেল
- ফল যা-ই হোক মেনে নেব: রেজাউল করিম
- চট্টগ্রামের ‘নগরপিতা’ নির্বাচনের ভোট শুরু
- চসিক নির্বাচনের শুরুতেই সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১
- পাথরঘাটায় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আটক
- খুলশিতে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, মোটরসাইকেল ভাঙচুর
- চসিক নির্বাচন: ভোট বর্জন করলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী
- চট্রগ্রামে নির্বাচনের নামে চূড়ান্ত তামাশা হচ্ছে: রুহুল কবির রিজভী
- লালখানে কাউন্সিলর প্রার্থী ও মনোনয়ন বঞ্চিত’র সমর্থকদের সংঘর্ষ
- ভোর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাসার সামনে সন্ত্রাসীরা: শাহাদাত
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
ইসি সচিব উন্নত দেশ চসিক নির্বাচন নির্বাচনি সহিংসতা ভোট না দেওয়ার মানসিকতা ভোটের আগ্রহ মো. আলমগীর