‘নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের পরিণত হয়েছে’
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০০
ঢাকা: নির্বাচন কমিশন (ইসি) ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নীলফামারী-৪ আসনের সাবেক এমপি, জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রেসিডিয়াম সদস্য, বিরোধীদলের সাবেক চিফ হুইপ ও স্থানীয় জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক শওকত চৌধুরীর বিএনপিতে যোগদান উপলক্ষে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনে পরিণত হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কোনো ব্যক্তিত্ব নেই। সংবিধান অনুসারে তার এই প্রতিষ্ঠান চালানোর কোনো ক্ষমতা নেই। গতকাল চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। এই নির্বাচনে যা হয়েছে তা আপনারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন। একেবারে রক্তাক্ত নির্বাচন হয়েছে। দুইজন কিংবা তিনজন মারা গেছে। বিএনপির কোনো এজেন্টকে কেন্দ্রে থাকতে দেওয়া হয়নি। তাদের শারীরিকভাবে অত্যাচার করে বের করে দেওয়া হয়েছে। দুঃখজনক হলো- এখন নির্বাচনগুলোতে প্রশাসনকে পুরোপুরিভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন আর আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন পুলিশ প্রশাসন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেন, এই নির্বাচন করার কী যুক্তি আছে? আমরা বলি এই নির্বাচনকে আমরা গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটা অংশ হিসেবে দেখি। এটা আমাদের একটা পার্ট। আমরা এটার মাধ্যমে আমাদের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করতে পারি। আবার আমরা এর মাধ্যমে জনগণের কাছে যেতে পারি। যেটা অন্য সময় যাওয়া খুব কঠিন। কারণ মিছিল, মিটিং, সভা-সমাবেশ কিছুই করতে দেয় না। যেটা গণতান্ত্রিকতার ন্যূনতম একটা অধিকার মাত্র। যেটাকে আমরা বলি ডেমোক্রেটিক স্পেস। আর সেই ডেমোক্রেটিক স্পেসকে তারা নিয়ে নিয়েছে। এই কারণেই আমরা নির্বাচনে যাই।’
‘ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন- ২০১৮ সালের নির্বাচনে আগের রাতে ভোট নিয়ে গেছে। ভোট তো হইনি ভোট দখল করে নিয়ে গেছে। আজকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে গিয়েও একই কায়দায় তারা কাজ করছে। আমরা বারবার বলেছি এই নির্বাচন বন্ধ করতে হবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনকে বাতিল করে একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় নির্বাচন চেয়েছি। এটা খুবই জরুরি’— বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দ্বায়িত্ব অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালন করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত কয়েক বছর ধরে নির্বাচনকে তারা প্রহসনে পরিণত করেছে। যে দেশে সংবিধানের মূল কথাই হচ্ছে, জনগণ রাষ্ট্রের মালিক। জনগণ নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের সরকার গঠন করবে। আর সেটাই হবে জনগণের সরকার।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা দাবি করছি, এই নির্বাচন কমিশনারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। আমরা দাবি করছি এই সরকারকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, তারা সংবিধানকে লঙ্ঘন করে জনগণের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছে এবং বিনা ভোটে বেআইনিভাবে সরকারে বসে আছে।
শওকত চৌধুরীকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই যোগদানের মাধ্যমে এটাই প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ এখন গণতন্ত্র চায়। বাংলাদেশের মানুষ এখন কথা বলতে চায়। তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়।’
যোগদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সৈয়দপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল গফুর সরকার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর জেলা বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম