Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সড়ক প্রশস্তকরণ শিখতে বিদেশ যাবেন ১০ কর্মকর্তা

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপনডেন্ট
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:৫১

ঢাকা: সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে বিদেশ সফরে যাবেন ১০ কর্মকর্তা। এ জন্য বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। তবে কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরে নিতে ৩০ লাখ টাকা আবদার করেছিল সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের ভেটোর মুখে ১০ লাখ টাকা কমিয়ে তা ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে।

‘কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী)-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ (আর ৭৪৫) আঞ্চলিক মহাসড়কটির কুষ্টিয়া হতে মেহেরপুর পর্যন্ত যথাযথ মান ও প্রশস্তায় উন্নীতকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পে এ আয়োজন রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪৩ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মেহেরপুর জেলার গাংনী ও মেহেরপুর সদর উপজেলার মধ্যে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রকল্পটি প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) যে কোনো সভায় উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর।’

উন্নয়ন প্রকল্পের বিদেশ সফর প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন এর আগে সারাবাংলাকে বলেন, ‘যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্পেই প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফরের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এটি ঠিক নয়। তাছাড়া কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে অতিপ্রয়োজনীয় ব্যয় ছাড়া কম গুরুত্বপূর্ণ ব্যয় পরিহারের নীতি গ্রহণ করেছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকারি অর্থ খরচ করে বিদেশে প্রশিক্ষণের কী প্রয়োজন সেটি খতিয়ে দেখা উচিত ছিল পরিকল্পনা কমিশনের।’

বিজ্ঞাপন

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী)-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক। সড়কটি কুষ্টিয়া শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া-পাকশি ফেরী-দাশুরিয়া মহাসড়কের ত্রিমোহনী থেকে শুরু হয়ে মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর হয়ে ঝিনাইদহ জেলা সদরে শেষ হয়েছে। এটির মোট দৈর্ঘ্য ১২০ দশমিক ৪০ কিলোমিটার, যার মধ্যে কুষ্টিয়া মেহেরপুর সড়কাংশ ৫৩ দশমিক ১৪ কিলোমিটার। এ সড়কের ২৩ দশমিক ১৭৯ কিলোমিটার কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগে এবং বাকি ২৯ দশমিক ৯৬১ কিলোমিটার মেহেরপুর সড়ক বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।

কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলা দুটি সীমান্ত সংলগ্ন জেলা। জেলা দুটিতে প্রচুর হাট বাজার ও মাঝারি শিল্প অবস্থিত। এ ছাড়া মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া জেলা কৃষি উৎপাদন ও কৃষি শিল্পের জন্য খ্যাত। কৃষি উৎপন্ন দ্রব্য ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে পরিবহনে এ সড়কটি সব সময় ব্যবহৃত হয়। সড়কটি যথাযথমানে উন্নীত হলে বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী মেহেরপুর জেলার ঐতিহাসিক মুজিবনগর, কাঙাল হরিনাথের যাদুঘর, আমঝুপি, মীর মোশারফ হোসেনের বাড়ি, ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্থানের সঙ্গে কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন আরামপ্রদ, ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। সড়কটির বহুমাত্রিক ব্যবহারের গুরুত্ব অনুধাবন করে সড়কটির কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সড়কের যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ করা প্রয়োজন।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে ভূমি অধিগ্রহণ, সড়ক বাঁধে মাটির কাজ, বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, বিদ্যমান পেভমেন্ট পুনঃনির্মাণ, বিদ্যমান পেভমেন্ট মজবুতকরণ, হার্ডসোল্ডার, সাফেসিং, নিউ জার্সি ব্যারিয়ার, পিসি র্গাডার সেতু, আরসিসি বক্স কালর্ভাট নির্মাণ, আরসিসি প্যালাসাইডিং, গ্রাস টার্ফিং, বৃক্ষ রোপণ এবং রোড মার্কিং করা।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-আল-রশীদ পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে বাংলাদেশের প্রথম রাজধানী মেহেরপুর জেলার ঐতিহাসিক মুজিবনগরের সঙ্গে কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজশাহীসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন এবং ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরিসহ প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।’

সারাবাংলা/জেজে/একে

সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক প্রশস্তকরণ

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর