অভিজিৎ হত্যা: দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:১০
ঢাকা: ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পৌঁছেছে। রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাইফুর রহমান জানান, ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালত থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ রায় হত্যার মামলার ডেথ রেফারেন্স এসেছে।
সাধাণত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের পূর্বে হাইকোর্টের অনুমতির প্রয়োজন হয়। এটাই ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত। ডেথ রেফারেন্সের পাশাপাশি বিচারিক আদালতের ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল দায়ের করে থাকেন। এখন সরকার যদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করতে চান তাহলে রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়ে থাকে।
এর আগে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ব্লগার অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যার মামলায় সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়াসহ পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড এবং উগ্রপন্থী ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান সাড়া ফেলা এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এ মামলায় সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম ওরফে সাজ্জাদ ওরফে শামস), আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
আর অপর আসামি উগ্রপন্থী ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে জিয়া, সায়মন ওরফে শাহরিয়ার, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিবকে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার রায়েও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাকে নিয়ে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে জঙ্গি কায়দায় হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অভিজিৎ রায়। চাপাতির আঘাতে আঙুল হারান তার স্ত্রী।
২০১৫ সালের একুশের বইমেলায় দুটি বই প্রকাশ হয় অভিজিতের, সে কারণেই স্ত্রী বন্যাকে সঙ্গে নিয়ে ওই বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি দেশে আসেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলায় এক অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে হামলার শিকার হন তারা। সিসি ক্যামেরায় অভিজিৎ রায় ও বন্যা আহমেদকে অনুসরণকারী এই যুবকই কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত শরীফুল বলে পুলিশের দাবি পর শাহবাগ থানায় এই হত্যা মামলা দায়ের করেন অধ্যাপক অজয় রায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হাত ঘুরে মামলাটির তদন্তভার কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের হাতে যায়। হত্যাকাণ্ডের চার বছর পর ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ছয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম। অভিযোগের পক্ষে ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়।
ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইবুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান ২০১৫ সালের বছর ১ অগাস্ট অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ মামলার ছয় আসামির বিচার শুরুর আদেশ দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস