Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুদক কর্মকর্তার ‘ঘুষ দাবির’ অডিও-ভিডিও হাইকোর্টে তলব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ মার্চ ২০২১ ২০:৫৪

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. আলমগীরের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ ওঠে। মামলার বাদী ঘুষ দাবির প্রমাণ হিসেবে অডিও-ভিডিও থাকার কথা জানালে, হাইকোর্ট সেই অডিও এবং ভিডিও আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ৭ মার্চ মামলার বাদীকে ওই অডিও এবং ভিডিও আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনউদ্দিন মানিক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহজাবিন রাব্বানী দীপা ও আন্না খানম কলি। আর রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামাল হোসেন।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিনউদ্দিন মানিক।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩ মার্চ ঢাকা জেলার সাবেক সাব রেজিস্ট্রার এবং বর্তমানে পিরোজপুরের জেলা রেজিস্ট্রার মো. আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগমের সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য দুদকের (ঢাকা-১) উপপরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম একটি নোটিশ পাঠান।

তবে সে নোটিশের উপযুক্ত জবাব না মেলায় জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর ওই দম্পতিকে আসামি করে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিচারিক আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে মামলা করে দুদক। ২৪ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৩ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন, ৯০ লাখ ১২ হাজার ৭৯৬ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনপূর্বক দখল রাখার অপরাধে জন্য দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এবং তাকেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

মামলাতে দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আবদুল কুদ্দুস হাওলাদার সাব-রেজিস্ট্রার ও জেলা রেজিস্ট্রার হিসেবে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থের দ্বারা তার নিজ নামে সম্পদ অর্জন করে দখলে রেখে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীর বারবার আসামিদের কাছে অনৈতিক লেনদেনের প্রস্তাব দিতে থাকেন বলে অভিযোগ আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার দম্পতির।

দুদক কর্মকর্তার এমন প্রস্তাবে আসামিরা (আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার দম্পতি) প্রতিকার খুঁজতে থাকেন দুদকের কাছেই। যার ধারাবাহিকতায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে অসাধু তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন চেয়ে দুই দফা দুদকে আবেদন জানান তারা।

২০২০ সালের ১৭ নভেম্বর এবং চলতি বছরের গত ১ ফেব্রুয়ারি তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন চেয়ে ওই আবেদন জানান মো. আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগম।

আবেদনে অভিযোগ করা হয়, ‘২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা সদর সাব রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োজিত থাকাকালীন গণশুনানির মাধ্যমে জনৈক উমেদারের অনৈতিক চাহিদা আমার ওপর প্রতিষ্ঠিত করে ২০১৮ সালে দুদক স্বপ্রণোদিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ গঠন করে। অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা আমাকে নোটিশ প্রেরণ করেন এবং তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বললে আমি ও আমার ভাই তার সঙ্গে দেখা করি এবং আমাদের মোবাইল নাম্বার দিয়ে আসি। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বার দিয়ে আমার ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করে। এ বিষয়ে আমি অপরাগতা প্রকাশ করলে তদন্তকারী কর্মকর্তা ক্ষুব্ধ হয়ে আমার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী আমলে না নিয়ে নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত থেকে স্থায়ী জামিনপ্রাপ্ত হই।’

এ জন্য ন্যায় বিচারের স্বার্থে আবেদনের বিষয়বস্তু বিবেচনা করে একজন নিরপেক্ষ তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ প্রদানের দাবি জানান মামলার আসামিরা। তবে আসামিপক্ষের আবেদনের ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি দুর্নীতি দমন কমিশন।

তাই প্রতিকারের আসায় তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন মামলার দুই আসামি মো. আব্দুল কুদ্দুস হাওলাদার ও তার স্ত্রী মাহিনুর বেগম।

রিট আবেদনে দুদকে দায়ের করা আবেদন নিষ্পত্তির আবেদন জানানো হয়। একইসঙ্গে রিট আবেদনে দুদক কর্মকর্তার অনৈতিক লেনদেনের দাবির বিষয়ে অডিও-ভিডিও আদালতে দাখিল করা হবে বলেও অবহিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক সারাবাংলা বলেন, `দুদকের মামলার বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন তদন্ত করার সময় আসামিপক্ষের কাছে অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করেন। এ কারণে ওই তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য গত ১ ফেব্রুয়ারি দুদকের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেন মামলার আসামি ঢাকা জেলার সাবেক সাব রেজিস্ট্রার আব্দুল কুদ্দস এবং তার স্ত্রী মাহিনুর বেগম। তাদের এ আবেদনে দুদক কোনো সাড়া না দেওয়ায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন তারা। আজকে ওই রিটের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।’

শুনানির সময় আদালত তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন তদন্তকারি কর্মকর্তা যে তাদের কাছে অর্থ দাবি করেছেন তার স্বপক্ষে কী প্রমাণ আছে?

তখন আবেদনের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘আমাদের কাছে এ বিষয়ে অডিও ভিডিও আছে। পরে সেই অডিও ভিডিও হাইকোর্টে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ বিষয়ে আগামী ৭ মার্চ পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য রেখেছে আদালত।’

এ বিষয় জানতে চাইলে রিটের পক্ষের আইনজীবী কামাল হোসেন জানান, ‘আদালত আমাদের কাছে ঘুষ গ্রহণের অডিওি ভিডিও থাকলে সেটি দাখিল করতে বলেছেন। আগামী ৭ মার্চ এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এমআই

টপ নিউজ দুদক হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর