মোটর সাইকেলের মহড়া নিয়ে বিরোধ: পাল্টাপাল্টি মামলা
১৮ মার্চ ২০২১ ১৭:২৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে সড়কে মোটর সাইকেলের মহড়া নিয়ে বিরোধের জেরে খুনের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী এবং যার সঙ্গে ঘটনার সূত্রপাত তার মা বাদী হয়ে বুধবার রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানায় মামলা দুটি করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাসুদ নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, নিহত হাশেমের স্ত্রী জরিনা বেগমের দায়ের করা মামলার এজাহারে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আরও পাঁচ-ছয় জনকে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাতকারী মো. মহসিনের মা মাফিয়া বেগমের দায়ের করা মামলার এজাহারে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে আগ্রাবাদের রঙ্গীপাড়া থেকে পিকআপ ভ্যানে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে এবং মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের মহড়া দিয়ে একদল কিশোর-তরুণ-যুবক আসছিল জাম্বুরি পার্কের দিকে। তাদের মহড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের অফিসের সামনে আসার পর ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় রিকশায় করে ওই এলাকা অতিক্রম করা স্থানীয় যুবক মহসিন পথে আটকে থাকেন। তিনি এর প্রতিবাদ করলে প্রথমে ঝগড়া ও পরে স্থানীয়দের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে একজন নিহত ও দু’জন আহত হন।
নিহত হাশেম খান (৩৫) আগ্রাবাদের রঙ্গীপাড়া এলাকার বাসিন্দা। বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। পেশায় সাউন্ডবক্সের মেকানিক ছিলেন।
সংঘর্ষের পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মো. মহসিনসহ ২৪ জনকে আটক করে। পরে মহসিনের ভাই মো. সোহাগকে (২৮) নগরীর সিঅ্যান্ডবি কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়, যিনি মহসিনকে মারতে দেখে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেছিলেন এবং এতে আহত হয়ে হাশেম মারা যান। এছাড়া বুধবার রাতে নগরীর বন্দর এলাকায় অভিযান চালিয়ে স্থানীয় মো. মাসুদকে (৪১) গ্রেফতার করা হয়, যিনি মহসিনের পক্ষে মারামারি করতে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ডবলমুরিং থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া সারাবাংলাকে জানান, আটক মোট ২৬ জনের মধ্যে ১০ জনকে মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আটক ২৪ জনের মধ্যে আটজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের অধিকাংশই কিশোর বয়সী। আটজনের সঙ্গে সোহাগ ও মাসুদকেও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত হিসেবে মহসিন, সোহাগ ও মাসুদসহ আটজনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। বাকি পাঁচজন হলেন- সাহাব উদ্দিন (২৬), আলী আকবর (৬০), মাসুদ রানা (২৮), মো. হেমায়েত ওরফে অপু (২৫) ও ১৫ বছর বয়েসী এক কিশোর।
মহসিনের মায়ের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার দু’জন হলেন- ফরিদ উদ্দিন সুমন (৩২) ও শামসুল হক (৩২)।
ওসি মোহাম্মদ মহসীন সারাাবংলাকে বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নিশ্চিত হয়েছি তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি আমরা উদ্ধার করেছি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সামনে ভাসমান চা দোকান থেকে ছোরাটি নিয়ে সোহাগ এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেছিল।’
সারাবাংলা/আরডি/এমআই