এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান-পরিচালক সেজে প্রতারণা, গ্রেফতার ২
২৫ মার্চ ২০২১ ১৯:২১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপে চাকরি দেওয়ার কথা বলে একটি সিমেন্ট কারখানার উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুই প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, খ্যাতনামা শিল্পগ্রুপের চেয়ারম্যান-পরিচালক সেজে তারা প্রতারণা করেন। আবার নিজেদের কখনও অবসরপ্রাপ্ত সচিব কিংবা সেনা কর্মকর্তা পরিচয়ও দেন তারা।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) ভোরে খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা থেকে তাদের গ্রেফতার করেছে নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। গ্রেফতার দু’জন হলেন- মো. হানিফ ওরফে ডিপজল (৫০) এবং শামসুল আলম (৪২)।
সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) আসিফ মহিউদ্দীন সারাবাংলাকে জানান, গত ২৩ মার্চ নগরীর কোতোয়ালী থানায় দেশের একটি সিমেন্ট কোম্পানির একজন উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রতারণার একটি মামলা করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ও এস আলম গ্রুপের পরিচালক পরিচয়ে এক ব্যক্তি তাকে ফোন করেন। তাকে এস আলম গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পদে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে তিনি রাজি হলে তাকে ঢাকায় সাক্ষাৎকারের জন্য যেতে হবে বলে জানান।
পরদিন এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি তাকে ফোন করেন। কয়েকদিন পর পরিচালক পরিচয়দানকারী ব্যক্তি তাকে ফোন করে তাকে সাইফুল আলম মাসুদের মেয়ে ও জামাতা এবং দু’জন প্রকৌশলীর সঙ্গে বিমানে ঢাকায় যাবার বিষয় ঠিক করা হয়েছে বলে জানান। বিমানের টিকেটের দামও বিকাশের মাধ্যমে নেন। এরপর আবার মাসুদের পরিচয় দিয়ে ফোন করে বন্দরে তার জন্য গাড়ি রাখা আছে জানিয়ে সেটি ছাড়ানোর জন্য বিকাশে টাকা নেন।
এডিসি আসিফ মহিউদ্দীন সারাবাংলাকে বলেন, “গ্রেফতার হওয়া হানিফ নিজেই এস আলম গ্রুপের পরিচালক সেজে সিমেন্ট কোম্পানির ডিজিএমকে ফোন করেছিলেন। পরে কণ্ঠস্বর পরিবর্তন করে হানিফই আবার সাইফুল আলম মাসুদ সেজে ফোন করেন। বিমানের টিকেট ও বন্দর থেকে গাড়ি ছাড়ানো বাবদ হানিফ ও শামসুল মিলে ভিকটিমের কাছ থেকে ৮০ হাজার ৭০০ টাকা হাতিয়ে নেন। এরপর যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে ভিকটিম বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। তখন তিনি থানায় মামলা করেন। আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দু’জনের অবস্থান শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার করেছি।”
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতার দু’জন সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের চেয়ারম্যান-পরিচালক, তাদের আত্মীয় কিংবা ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা, সচিব, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ ধরনের নানা পরিচয় দিয়ে হানিফ প্রতারণার জাল তৈরি করে। শামসুল তার সহযোগী। চাকরির প্রলোভনে ফেলে তারা হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা।
এর আগে, বেঙ্গল গ্রুপের পরিচালক পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে ঢাকার গুলশান থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় হানিফকে গ্রেফতার করা হয়েছিল বলে জানান এডিসি আসিফ মহিউদ্দীন।
সারাবাংলা/আরডি/এমও