“দু’দিন ধরেই খোঁজ মিলছিল না, সকালে জানায় মরে গেছে”
৩ এপ্রিল ২০২১ ২১:০৭
ঢাকা: “গত দু’দিন ধরে চেষ্টা করেও ফোনে ঝিলিকের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। আজ সকালেই ঝিলিকের স্বামী সাকিব ফোন দিয়ে আমাদের জানায় ঝিলিক মারা গেছে। আমার বোনটাকে তারা মেরে ফেলেছে। বোনের আট মাসের সন্তানের এখনও খোঁজ পাইনি।”
শনিবার (৩ মার্চ) বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ঝিলিকের ছোট ভাই জাবির হোসেন খান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে, শনিবার (৩ এপ্রিল) সকালে হাতিরঝিল আমবাগান মূল সড়কের পার্শ্ববর্তী আইল্যান্ডে উঠে পড়া একটি প্রাইভেটকার থেকে ঝিলিক ও তার স্বামীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে নিহত ঝিলিকের শরীরে সড়ক দুর্ঘটনার কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ঝিলিকের ছোট ভাই বলেন, ‘আজ সকালে ঝিলিকের স্বামী সাকিব আলম আমার মাকে ফোন দিয়ে বলে ঝিলিক মারা গেছে। আমরা হাসপাতালে আছি। এইটুকু বলে সাকিব ফোন রেখে দেয়। এরপর কয়েকটি হাসপাতালে ঘুরেও তার কোনো খোঁজ পাইনি। পরে গুলশানের বাসায় গিয়ে সাকিবের ছোট ভাই, মাসহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসা করলে তারা কোনো উত্তর দিতে পারে নাই। এরপর ৯৯৯ কল দিলে গুলশান থানা পুলিশ তাদের বাসায় যায়। তখন সাকিবের পরিবারের লোকজন জানায় ঝিলিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
স্বামীর দাবি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু, শরীরে নেই আঘাতের চিহ্ন
ছোটভাই জাবির আরও বলেন, ‘সাকিবের পরিবার বেশি ধনি হওয়ায় তাদের সঙ্গে আমাদের তেমন যাতায়াত ছিল না। এক সপ্তাহ আগে সাকিব ভারত যায় নিজের পায়ের চিকিৎসা করাতে। সেখান থেকে আসার পর বিমানবন্দরে ঝিলিক ও সাকিবের সঙ্গে তাদের সর্বশেষ দেখা হয়। এরপর আর যোগাযোগ নাই। গত দুইদিন ধরে ফোন দিয়েও ঝিলিককে পাচ্ছিলাম না আমরা কেউ।’
নিহত ঝিলিকের চাচা বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রেমের সম্পর্ক হয় তাদের। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। আরমান আলম সাজিদ নামে আট মাসের একটি ছেলে রয়েছে তাদের। ঝিলিকের বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ লৌহজং উপজেলায়। তবে অনেক আগে থেকেই তারা রাজধানীর মোহাম্মদপুর নুরজাহান রোডে থাকেন। ঝিলিকের বাবা আনোয়ার হোসেন গত বছর এপ্রিল মাসে মারা যান। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলো ঝিলিক।’
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানায়, প্রাইভেটকারে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী সাকিবকে আটক রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সারাবাংলা/এসএসআর/এমও