টাকা ছাড়া পাঁচতারকা হোটেলের অংশীদার, পি কে হালদারের নামে মামলা
৪ এপ্রিল ২০২১ ১৮:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো: প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে একটি পাঁচতারকা হোটেলের শেয়ার আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে চট্টগ্রামে মামলা হয়েছে। একই মামলায় আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কোনো ধরনের বিনিয়োগ ছাড়াই ফুসলিয়ে তারা হোটেলটির ৫৫ শতাংশ শেয়ার গ্রহণ করেন এবং পরে প্রতিশ্রুত টাকা পরিশোধ না করে প্রতারণা করেন।
রোববার (৪ এপ্রিল) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার জাহানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন কক্সবাজারে রেডিসন ব্লু হোটেলের অন্যতম অংশীদার মোহাম্মদ আব্দুল আলীম চৌধুরী। তিনি ক্লুইস্টন ফুডস অ্যান্ড অ্যাকোমোন্ডেশন লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
মামলায় মূল অভিযুক্ত এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদার (৫৩) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এন্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডেরও (আইএলএফএসএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। গ্রাহকদের ৩০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মুখে থাকা পি কে হালদারের ২০২০ সালের শুরুতে বিদেশে পালিয়ে যান। তার অবৈধ সম্পদের সন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশনও।
একই মামলায় অভিযুক্ত বাকি চারজনও পি কে হালদারের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এরা হলেন- ঢাকার বনানীর জাহাঙ্গীর আলম (৫৪), উত্তরার সিদ্দিকুর রহমান (৫২), পিপলস লিজিংয়ের পরিচালক উজ্জ্বল কুমার নন্দী (৪১) ও পিরোজপুরের রতন কুমার বিশ্বাস (৫৪)।
মামলার আরজিতে বাদী অভিযোগ করেছেন, কক্সবাজারে একটি পাঁচতারকা হোটেল নির্মাণের পরিকল্পনা করে তিনি ২০১৪ সালে আমেরিকার রেডিসন ব্র্যান্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। হোটেল নির্মাণের জন্য ঋণ পেতে বিভিন্ন জায়গায় ধর্ণা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি পি কে হালদারের দ্বারস্থ হন। তখন পি কে হালদার ও তার চার সহযোগী মিলে অর্থ যোগানের প্রস্তাব দিয়ে ৫৫ শতাংশ শেয়ার নিজেদের নামে ট্রান্সফার করে নেন। এর মধ্যে পি কে হালদার নয় শতাংশ, জাহাঙ্গীর আলম ও সিদ্দিকুর রহমান পাঁচ শতাংশ করে এবং রতন বিশ্বাস এক শতাংশ। বাকি ৩৫ শতাংশের শেয়ার পিপলস লিজিংয়ের নামে ট্রান্সফার করা হয়, যে প্রতিষ্ঠানে আবার পি কে হালদারের শেয়ারের পরিমাণ ৯৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
বাদীর অভিযোগ, শেয়ার হস্তান্তর বাবদ অর্থ পরিশোধ না করে পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা নানা তালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে তার ব্যবস্থাপনাধীন রিলায়েন্স ফিন্যান্সে আব্দুল আলীম চৌধুরীর কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে থাকা ঋণের সঙ্গে সমন্বয় করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন হালদার। ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে তিনি সেই প্রতিশ্রুতিও রক্ষা না করায় বাদি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে আরজিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট রুবেল পাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতারণার মাধ্যমে হোটেলের শেয়ার আত্মসাতের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৬, ৫০৬ ও ১০৯ ধারায় পি কে হালদারসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত সিআইডিকে মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ২৬ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দিয়েছেন।’
সারাবাংলা/আরডি/এমআই