Saturday 12 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাইডেনের ১০০ দিন: ‘এগিয়ে যাচ্ছে আমেরিকা’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৯ এপ্রিল ২০২১ ১৪:২৪

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ১০০ দিনের প্রাক্কালে জো বাইডেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের ওপর নজিরবিহীন হামলা হয়েছে। তারপরও গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার পথে আমেরিকা আবার সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। বুধবার (২৮ এপ্রিল) কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের বক্তৃতায় বাইডেন এসব কথা বলেন।খবর রয়টার্স।

এদিকে, ৬ জানুয়ারির হামলার কথা মাথায় রেখে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই বক্তৃতা উপলক্ষে ক্যাপিটল হিলসহ ওয়াশিংটন ডিসিতে গ্রহণ করা হয় নজিরবিহীন নিরাপত্তা, এমনটা জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।

বিজ্ঞাপন

প্রথা অনুযায়ী যৌথ অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের ভাষণের সময় সরকারের সব বিভাগের ঊর্ধ্বতন লোকজনসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিতি থাকেন। কিন্তু চলমান স্বাস্থ্যসতর্কতার জন্য এবারের অধিবেশনে নির্দিষ্টসংখ্যক লোক উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, নজিরবিহীন নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে। করোনা মহামারিসহ আমেরিকার সমাজ-রাজনীতির এক অস্থির সময়ে বাইডেন ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলেও উত্তরসূরি বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকার করেননি। ইতিহাসের চরম বিভক্তির সময় ক্ষমতা গ্রহণ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিভেদের বদলে ঐক্যের আমেরিকার কথা বললেন।

সাধারণত শপথ নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রেসিডেন্ট কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে এমন ভাষণ দিয়ে থাকেন। তবে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, ভ্যাকসিন কর্মসূচিসহ সীমান্ত সমস্যা সামাল দেওয়ার মতো কাজে ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিন অত্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হয় প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে। একের পর এক নির্বাহী আদেশ দিয়ে কর্মসংস্থান, অভিবাসন, আগ্নেয়াস্ত্র সমস্যাসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে তিনি ইতোমধ্যেই অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, বাইডেনই প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি দুজন নারী নেত্রীকে পেছনে রেখে জাতির সামনে কংগ্রেসে বক্তৃতা করলেন। কংগ্রেসে যৌথ অধিবেশনে পদাধিকার বলে সভাপতিত্ব করেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। আর প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার প্রেসিডেন্টকে কংগ্রেসে বক্তৃতার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এবার স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানান।

এবারই প্রথম কোনো নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিস কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ম্যাডাম ভাইস প্রেসিডেন্ট সম্বোধন করে বক্তৃতা দিতে শুরু করেন। তিনি বলেন, আমেরিকার ইতিহাসে এমন সম্বোধন আর কোনো প্রেসিডেন্ট করতে পারেননি।

বাইডেন তার বক্তৃতায় বলেন, কংগ্রেসের এমন সভায় দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্টরা যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন, শান্তি উদযাপন করেছেন। কিন্তু, তিনি আমেরিকার সংকট ও সম্ভাবনার কথা বলতে দাঁড়িয়েছেন।

ওয়াল স্ট্রিট আমেরিকা বিনির্মাণ করেনি উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, মধ্যবিত্তরাই আমেরিকা বিনির্মাণ করেছে। শ্রমজীবীরা মধ্যবিত্ত সৃষ্টি করেছে। এই শ্রমজীবীদের অনুকূলে আইন প্রণয়ন করার জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। শীর্ষ এক শতাংশ লোকজনকে কর হিসেবে এবার তাদের অংশটা পরিশোধ করতে হবে বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ঘোষণা দেন।

বৈদেশিক নীতির বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেছেন, আমেরিকা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে নিজেদের অবস্থান অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী সক্রিয় থাকবে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে সতর্ক করে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপের পরিণতি তাকে ভোগ করতে হবে। ইরান ও উত্তর কোরিয়াকেও সতর্ক করেছেন তিনি। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কথা আবার ব্যাখ্যা করেছেন বাইডেন।

অপরদিকে, শ্বেতাঙ্গ রক্ষণশীলতাও জঙ্গিবাদের মতো বলে উল্লেখ করেন বাইডেন। তিনি বলেন, মার্কিন সমাজে বৈষম্যের অবসানে কাজ করতে হবে। পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক ও বিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হবে। কংগ্রেসকে দলীয় মতপার্থক্য ভুলে এ নিয়ে আইন প্রণয়নের জন্য তিনি আহ্বান জানান।

পাশাপাশি, ক্ষমতা নেওয়ার ১০০ দিনের মধ্যে ১৩ লাখের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন বলে উল্লেখ করেন বাইডেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পর আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে বলে তিনি জানান। কর্মজীবীদের ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টায় ১৫ ডলার করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন আমেরিকার অভিবাসন আইনের সংস্কার, জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যা, পুলিশ আইনের সংস্কার ও আগ্নেয়াস্ত্র আইনের সংশোধনের কথা বলেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বেশি বিনিয়োগ করে এসব ক্ষেত্রে আমেরিকা বিশ্বে নেতৃত্ব প্রদান করবে বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার বক্তৃতায় উল্লেখ করেন।

অভিবাসন সংস্কার নিয়ে বাইডেন বলেন, তিন দশক ধরে শুধু কথাই বলা হচ্ছে। কিন্তু অভিবাসন নিয়ে কিছুই করা হয়নি। যেসব দেশ থেকে নথিপত্রহীন অভিবাসীদের আগমন ঘটছে, সেসব দেশকে সাহায্য করে আমেরিকা অভিমুখী যাত্রা বন্ধ করতে হবে বলে তিনি বলেন।

অভিবাসীরা আমেরিকার ইতিহাসে, এমনকি করোনা মহামারির সময়ে বিশাল অবদান রেখেছেন বলে বাইডেন উল্লেখ করেন। আমেরিকা অভিবাসনকে সমর্থন করে জানিয়ে বাইডেন এ ব্যাপারে কংগ্রেসকে দ্রুত সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান। অল্প বয়সে আমেরিকায় আসা নথিপত্রহীন লোকজনসহ বাইরে থেকে আসা কর্মজীবী ও অভিবাসী কৃষিশ্রমিকদের অনুকূলে অভিবাসন আইন প্রণয়নের জন্য তিনি আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।

রিপাবলিকান পার্টির একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ সিনেটর টিম স্কট প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বক্তৃতার জবাবে বলেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কারণেই আমেরিকা এবার একটি চমৎকার গ্রীষ্মকাল দেখতে পারছে। ট্রাম্পকে দ্রুততার সঙ্গে ভ্যাকসিন উদ্ভাবণের কৃতিত্ব দিয়ে সিনেটর টিম স্কট বলেন, আমেরিকার আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ওয়াশিংটন থেকে আসবে না। সমাজতান্ত্রিক স্বপ্নবাজদের কাছ থেকেও আসবে না। আমেরিকার প্রতিটি উজ্জ্বল সম্ভাবনা জনগণের কাছ থেকে আসবে। স্কুল কেনো এখনো খুলে দেওয়া হচ্ছে না, এ নিয়ে সমালোচনা করেন রিপাবলিকান সিনেটর স্কট।

সারাবাংলা/একেএম

জো বাইডেন ডেমোক্রেট পার্টি যৌথ অধিবেশন রিপাবলিকান পার্টি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

১৫ অক্টোবর এইচএসসির ফল প্রকাশ
১২ অক্টোবর ২০২৪ ১২:১৩

ভেজা মাঠে খেলতেই চাননি মেসিরা!
১২ অক্টোবর ২০২৪ ১১:৪৯

সম্পর্কিত খবর