সরকারের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের মামলা
২৯ এপ্রিল ২০২১ ১৭:৫১
অস্ট্রেলিয়ার সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ৮০০ আদিবাসী। পূর্বপুরুষ এবং তাদের সঙ্গে হওয়া অবিচারের ক্ষতিপূরণও দাবি করেছেন তারা। খবর ডয়চে ভেলে।
আইনি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠান শাইন লইয়ার্স বুধবার (২৮ এপ্রিল) তাদের পক্ষে এই মামলাটি দায়ের করেছে।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়, ১৯৭০ সাল পর্যন্ত অন্তর্ভুক্তি নীতির অধীনে অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী শিশুদের জোরপূর্বক পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে শ্বেতাঙ্গ পরিবারে বড় করার বিধান চালু ছিল। কয়েক হাজার আদিবাসী এবং টরেস স্ট্রেইট দ্বীপপুঞ্জের বাসিন্দারা এমন নীতির শিকার হয়েছেন। স্টোলেন জেনারেশন বা চুরি যাওয়া প্রজন্ম হিসেবে তাদের পরিচিতি তৈরি হয়। কিন্তু, ভুক্তভোগীদেরকে সরকার কোনো রকম ক্ষতিপূরণ দেয়নি।
ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, মামলার বাদী ওই ৮০০ আদিবাসীকেও শিশুকালে তাদের পরিবার থেকে জোরপূর্বক বিচ্ছিন্ন করা হয়। আরো কয়েক হাজার ভুক্তভোগী ভবিষ্যতে এই মামলায় যুক্ত হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শাইন লইয়ার্সের পরামর্শক ট্রিস্টান গ্যাভেন বলেন, স্বীকৃতি ছাড়া তাদের ভবিষ্যতের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
এর আগে, ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড শিশুদের জোরপূর্বক পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার ইস্যুতে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, অতীতে যে অবিচার হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি আর কখনো হবে না।
উনিশ শতক জুড়েই ওই বিচ্ছিন্নকরণ প্রক্রিয়া চলমান ছিল। তবে, কিছু জায়গায় ১৯৭০ এর দশক পর্যন্ত মিশ্র বর্ণের শিশুদেরকেও তুলে নেওয়া হতো।
৮৪ বছর বয়সী হেথার অ্যালি এখনো সেই স্মৃতি মনে করতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার নর্দান টেরিটোরির এই বাসিন্দাকে নয় বছর বয়সে তার মায়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে অ্যালি বলেন, তারা গোটা একটি প্রজন্মকে এমনভাবে মুছে দিয়েছে, যেনো তাদের কোন অস্তিত্বই ছিল না। তিনি এই আইনি লড়াইয়ে যোগ দিয়েছেন কারণ তিনি মনে করেন তাদের কাহিনী প্রকাশ্যে আসা দরকার।
এদিকে, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকটি রাজ্যে স্থানীয়ভাবে ভুক্তভোগী আদিবাসীদের জন্য কিছু কর্মসূচি থাকলেও কেন্দ্র সরকার বরাবরই ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। ২০২০ সালে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা সরকারের নেই।
অন্যদিকে, বুধবার দায়ের করা মামলায় ক্ষতিপূরণ বিষয়টি নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি। আসছে জুনে এই মামলার প্রাথমিক শুনানি শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে ডয়চে ভেলে।
সারাবাংলা/একেএম