নওগাঁয় আম সংগ্রহ শুরু
২৬ মে ২০২১ ০০:৪৫
নওগাঁ: দেশে আম উৎপাদনে অন্যতম শীর্ষ জেলা নওগাঁয় বাগান থেকে আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। জেলার সাপাহার উপজেলার বরেন্দ্র অ্যাগ্রো ফার্ম বাগানে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছে জেলা প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৫ মে) বিকেলে সপাহার সদরে আম সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন ছাড়াও আম চাষি ও বিপণনকারীদের সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. হারুন-অর-রশীদ, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া, নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক শামছুল ওয়াদুদ, সাপাহার উপাজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান, উপজেলা আম চাষি সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান, আম আড়ৎদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেনসহ অন্যরা।
সভায় আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা বলেন, নওগাঁর আম স্বাদে ও গুণে খুবই ভালো। ব্র্যান্ডিংয়ে পিছিয়ে থাকায় এই এলাকার আম দেশের বিভিন্ন বাাজারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর আম বলে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এরই মধ্যে নওগাঁ আম উৎপাদনে দেশের শীর্ষস্থান দখল করেছে। আমের রাজধানী এখন নওগাঁ। ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রেও নওগাঁকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য গণমাধ্যম ও প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান তারা।
আম বাজারজাতকরণে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে ব্যবসায়ীরা বলেন, আম বাজারজাত করার সময় আড়তদারদের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়া আমের ভরা মৌসুমে সাপাহার উপজেলা সদর আমের মোকামকে কেন্দ্র করে প্রধান সড়কে তীব্র যানজট তৈরি হওয়ায় আম বিপণনে বিড়ম্বনার শিকার হন চাষিরা। আম বাজারজাত করার সমস্যা দূর করতে প্রশাসনকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
সভায় পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান মিয়া বলেন, নওগাঁর আমের ব্র্যান্ডিং করার জন্য গত বছর সুন্দর সুন্দর স্লোগান তৈরি করা হয়েছিল। এ বছরও সুন্দর সুন্দর স্লোগান তৈরি করা প্রয়োজন। আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের যেন কোনো ধরনের হয়রানি শিকার না হতে হয়, সে বিষয়ে পুলিশ সচেষ্ট থাকবে। এছাড়া আম ব্যবসাকে কেন্দ্র করে যেন পরিবহনে চাঁদাবাজি না হয়, সে বিষয়েও পুলিশ কঠোর অবস্থানে থাকবে।
সভায় জেলা প্রশাসক হারুন অর রশিদ বলেন, আমি চাষি ও ব্যবসায়ীদের যেন হয়রানি না হতে হয়, তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসনও সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। আমের মোকামগুলোকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট যানজট নিসরন করতেও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, সাপাহার উপজেলায় একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হতে যাচ্ছে। এই অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হলে আম সংরক্ষণাগার করা হবে। তখন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা আরও লাভবান হবেন। আম ব্যবসায়ীরা যেন সহজ শর্তে ঋণ পান এবং ভরা মৌসুমে বেশি সময় পর্যন্ত ব্যাংক খোলা থাকে, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
সভায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানান, জেলায় চলতি মৌসুমে ২৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৪ মেট্রিক টন হিসাবে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন।
সারাবাংলা/টিআর