সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয়, উপজেলায় মডেল মন্দির চায় হিন্দু মহাজোট
১৯ জুন ২০২১ ১৯:৫২
ঢাকা: জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি আলাদা একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও সংখ্যালঘু মন্ত্রী নিয়োগের দাবি জানিয়েছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংখ্যানুপাতে বাজেটে বরাদ্দেরও দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। এই বরাদ্দদিয়ে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে মহাজোটের পক্ষ থেকে। একইসঙ্গে হিন্দু উত্তরাধিকার আইন পরিবর্তন না করা এবং দুই বেসরকারি সংস্থা ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘বাঁচতে শেখা’র বিরুদ্ধে হিন্দুবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযাগ এনে তাদের বন্ধ করে দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।
শনিবার (১৯ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু মহাজোটের পক্ষ থেকে এসব দাবি-দাওয়া ও বক্তব্য তুলে ধরা হয়। জোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই— কথিত সুরক্ষা আইন হিন্দু সমাজের কোনো কাজে আসবে না। সংখ্যালঘু সমস্যার একমাত্র সমাধান জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন ও একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে জাতীয় সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসন রেখে পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে সেখানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে একজনকে পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ করতে হবে।
বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে জোট মহাসচিব বলেন, একইসঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য জনসংখ্যা অনুপাতে ২ হাজার ২৫৮ কোটি ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ করতে হবে এবং অতিরিক্ত ৫ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দিতে হবে। এই অর্থ দিয়ে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মডেল মন্দির নির্মাণ করতে হবে। একইসঙ্গে রথযাত্রায় একদিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করতে হবে।
হিন্দু ধর্মীয় বিধিবিধানের কোনো ধরনের পরিবর্তন করা যাবে না জানিয়ে মহাজোট নেতারা বলেন, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে কোনো ধরনের পরিবর্তন হিন্দু সমাজ সহ্য করবে না। হিন্দু ধর্মীয় বিধিবিধান রক্ষা করতে হিন্দু সমাজ সারাদেশে ব্যাপক আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং হিন্দু বিধিবিধান রক্ষা করতে যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছে।
দুই এনজিও ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ও ‘বাঁচতে শেখা‘র বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে হিন্দু মহাজোট বলছে, আমরা দীর্ঘ দিন ধরে দেখতে পাচ্ছি হিন্দু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করতে খ্রিস্টান সম্প্রদায় হাজার বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নানা অপকৌশল প্রয়োগ করে আদিবাসী উপজাতিদের খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করেছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও বাঁচতে শেখা নামক দু’টি এনজিও হিন্দু সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার জন্য বিভিন্ন স্থানে সেমিনার করে হিন্দু ধর্মীয় বিধিবিধান পরিবর্তনের জন্য নানা অপচেষ্টা চালিয়ে হিন্দুদের মধ্যে বিভেদ ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। হিন্দু সম্প্রদায় এই দুই এনজিও’র সমাজ, সম্প্রদায় ও ধর্মবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে। অন্যাথায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য হিন্দু সমাজ দায়ী থাকবে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সপ্তর্ষি মণ্ডলের সদস্য রুপানুগ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়, সিনিয়র সহসভাপতি প্রদীপ চন্দ্র, প্রদীপ কুমার সরকারসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এআই/টিআর
উপজেলায় মডেল মন্দির জাতীয় হিন্দু মহাজোট বাজেটে বরাদ্দ সংখ্যানুপাতে বরাদ্দ সংসদে সংরক্ষিত আসন