‘অ্যান্টিবডি তৈরি হলেই করোনা প্রতিরোধী— এ ভাবনা সঠিক নয়’
২৩ জুন ২০২১ ২৩:৩০
ঢাকা: কারও শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেই তিনি এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী হয়ে গেছেন— এই ভাবনা সঠিক নয় বলে মনে করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি পাওয়া মানেই হার্ড ইমিউনিটি নয় বলেও জানিয়েছে এই দফতরটি।
বুধবার (২৩ জুন) দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের বুলেটিনে এ কথা বলেন প্রতিষ্ঠানটির অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
সম্প্রতি এক গবেষণায় ঢাকায় ও চট্টগ্রামের অধিকাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, বস্তি ও বস্তিসংলগ্ন এলাকায় ঢাকা শহরে ৭১ শতাংশ ও চট্টগ্রামে ৫৫ শতাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে।
অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ঢাকার ৭১ শতাংশ মানুষের অ্যান্টিবডি মানেই সবার দেহে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে— এটা বলা ঠিক হবে না। গবেষণা প্রতিবেদনে যে তথ্য এসেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু গবেষণার জন্য দেশের নিদিষ্ট কিছু স্থান থেকে কিছু তিনমুনা সংগ্রহ করছে। এ দিয়ে কোনো দেশের অবস্থান বোঝানো যাবে না।
তিনি বলেন, শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি পাওয়া মানে দেশের ৭১ শতাংশ মানুষের দেহে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে— এটা বলা সঠিক নয়। অনেকেই এমন মনে করছেন য অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে মানে আপনার দেহে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে। কিন্তু এটা বলা যাবে না। অ্যান্টিবডি মানে আপনি করোনা প্রতিরোধী— এটা ভাবাও সঠিক নয়।
ডা. রোবেদ আমিন আরও বলেন, মানুষের দেহে কতটুকু অ্যান্টিবডি থাকলে করোনা প্রতিরোধী হয়, সেটি এখনো কোনো গবেষণায় পরিষ্কার হয়নি। এছাড়া দেশের সব এলাকায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হলে তবেই বলা যাবে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়েছে। এই ছোট গবেষণা দিয়ে হার্ড ইমিউনিটির বিষয়ে কিছুই বলা যাবে না। এছাড়া মানুষের দেহে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, এর মাধ্যমে সে করোনা প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছে— সেটিও পরিষ্কারভাবে বলা যাবে না।
করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প কিছুই নেই এবং স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে করোনা সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব— বলেন অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর