ফের মৃত্যু ২ শতাধিক, সংক্রমণ আরও ৮৪৮৯
১৭ জুলাই ২০২১ ১৭:২৭
ঢাকা: পাঁচদিন পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মৃত্যু দুইশ’র নিচে নেমেছিল গতকাল। এরপর ফের করোনায় মৃত্যু ছাড়িয়েছে দুইশ’র ঘর। গত ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ছিল ২০৪। এ নিয়ে দেশে করোনায় মোট মৃত্যু ছাড়িয়ে গেল ১৭ হাজার ছয়শ।
এদিকে, একই সময়ে দেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৪৮৯ জনের শরীরে। এ নিয়ে এক সপ্তাহ পর ফের সংক্রমণ ১০ হাজারের নিচে নামল।
এর আগে, গত শনিবার দেশে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ৮ হাজার ৭৭২ জনের শরীরে। মূলত অন্যান্য দিনের তুলনায় শুক্রবার সারাদেশে নমুনা পরীক্ষা উল্লেখযোগ্য হারে কম হওয়ার কারণেই সংক্রমণ শনাক্ত হয় কম।
শনিবার (১৭ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিমা সুলতানার সই করা কোভিড সংক্রান্ত নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত পাঁচদিন টানা দুই শতাধিক মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে মারা যান ১৮৭ জন। এ ছাড়া দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ওইদিন ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হন ১২ হাজার ১৪৮ জন। এটি দেশে একদিনে পঞ্চম সর্বোচ্চ সংক্রমণ। এ নিয়ে গত টানা পাঁচ দিন সংক্রমণ শনাক্ত হলো ১২ হাজারের বেশি। আর এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমণ ছঠাড়িয়ে গেছে ১০ লাখ ৮৩ হাজার।
এর আগে, ১৫ জুলাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে ২২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃত্যুর সংখ্যা এটি ছিল একদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
গত ১৪ জুলাই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২১০ জন, ১৩ জুলাই ২০৩ জন, ১২ জুলাই ২২০ জন, ১১ জুলাই সর্বোচ্চ ২৩০ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে শনিবার (১০ জুলাই) ১৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার ছিল ৬২৭টি। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ছিল ১৩০টি, জিন এক্সপার্ট ল্যাব ৫০টি, র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ল্যাব ৪৪৭টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় সংগৃহীত নমুনা ৩০ হাজার ১৫টি। এর মধ্যে অ্যান্টিজেন টেস্টসহ নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৯ হাজার ২১৪টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ৭২ লাখ ১৫ হাজার ৫৮১টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫২ লাখ ৯৩ হাজার ৩২৩টি, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১৯ লাখ ২২ হাজার ২৫৮টি।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার সংক্রমণ মিলেছে ৮ হাজার ৪৮৯টি নমুনায়। এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ লাখ ৯২ হাজার ৪১১টি। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৮২০ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ২৩ হাজার ১৬৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৪ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে মোট ১৭ হাজার ৬৬৯ জনের মৃত্যু হলো।
নমুনা সংগ্রহের বিপরীতে গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের গড় ১৫ দশমিক ১৪টি। প্রতি ১০০ জনে সুস্থতার হার ৮৪ দশমিক ৫১। শনাক্তের বিপরীতে সুস্থতার হার ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।
করোনায় মৃত ২০৪ জনের মধ্যে পুরুষ রোগী ১২৫ জন, নারী ৭৯ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ১২ হাজার ২৯১ জন। মৃতদের মধ্যে মোট নারী ৫ হাজার ৩৭৮ জন। গড়ে পুরুষ রোগী মৃত্যুর হার ৬৯ দশমিক ৫৬, নারী রোগী মৃত্যুর হার ৩০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
মৃতদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী রয়েছেন দুইজন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১২ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ২৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৫৮ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সী ৫১ জন এবং ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সী রয়েছেন ৩৫ জন।
২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে বিভাগওয়ারী ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৮২ জন, চট্টগ্রামে ৩২ জন, রাজশাহীতে ২০ জন, খুলনায় ৪৯ জন এবং বরিশালে ৫ জন, সিলেটে দুইজন, রংপুরে ১০ জন, ময়মনসিংহে ৪ জন। এর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ১৬১ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৪১ জন, বাসায় মারা গেছেন দুইজন।
বিজ্ঞপ্তিতে ভ্যাকসিন বিষয়ক তথ্যে উল্লেখ করা হয় এ পর্যন্ত কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কাউকে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়নি। এ পর্যন্ত কোভিশিল্ডের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৮ জন। সিনোফার্মের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৬ রাখ ৫১ হাজার ৫৪৯ জন, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২ হাজার ২৫৯ জন।
ফাইজারের প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৪৬ হাজার ৯৮১ জন, মডার্নার প্রথম ডোজ নিয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৫৭১ জন। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় করোনা প্রতিরোধে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। যারা আগে থেকে দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত তারাসহ বয়োজ্যেষ্ঠদের করোনা পজিটিভ হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হোন। করোনার নমুনা দেওয়া সময় দালালচক্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
সারাবাংলা/একে/টিআর