Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমিয়ত গেছে সরকারের চাপে: মির্জা ফখরুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ জুলাই ২০২১ ১৭:২১

ঢাকা: সরকারের ‘প্রচণ্ড’ চাপে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ২০ দলীয় জোট ছেড়ে চলে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (১৮ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনীতিতে উনারা (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম) টিকতে পারছেন না। সেকারণে উনারা চলে গেছেন। এই কথা বললেই তো হয়- প্রচণ্ড চাপে আমরা টিকতে পারছি না, মামলা-মোকাদ্দমায় ভীষণভাবে আমরা ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছি। সেটা না বলে কোনো ব্যক্তি বা কোনো দলকে দোষারোপ করা ঠিক কাজ নয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী রাজনীতি করছি এবং ২০ দলে যারা আছেন আমাদের সঙ্গে তারাও সেভাবে রাজনীতি করছে এবং আমাদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা চমৎকার।’

এর আগে, গত ১৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে ২০ দল ছাড়ার ঘোষণা দেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া। এই অংশটি প্রয়াত আল্লামা নুর হোসেইন কাশেমীর অনুসারী।

জোট ছাড়ার সময় বাহাউদ্দীন জাকারিয়া বলেন, ‘সম্প্রতি শরিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ও মতামত না নিয়ে বিএনপির একতরফাভাবে নির্বাচনের বর্জনের ঘোষণা দেওয়া, বিএনপি মহাসচিবের শরীয়া আইনে বিশ্বাসী না হওয়ার বক্তব্য দেওয়া, দেশব্যাপী আলেম-উলামাদের জেলজুলুমের প্রতিবাদ না করা, দলের প্রয়াত নেতা আল্লামা নুর হোসাইন কাশেমীর ইন্তেকালের পর তার প্রতি বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন না করা এবং তার জানাজায় অংশগ্রহণ না করায় জমিয়তের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আমরা মনে করি ২০ দলীয় জোট থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করাই জমিয়তের জন্য কল্যাণকর।’

বিজ্ঞাপন

শরীয়া আইন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘শরীয়া আইনের ব্যাপারে উনারা বলেছেন যে, আমরা শরীয়া আইনে বিশ্বাস করি না। আমাদের সংগঠনের গঠনতন্ত্র পড়লে দেখবেন, শরীয়া আইনের বিশ্বাসের ব্যাপারটা নাই কোথাও। উনারা চান, উনারা করুন। আমাদের সব জায়গাতে পরিষ্কার করে বলা আছে যে, আমরা শরীয়া আইনের কোনো বিরোধিতা করব না, শরীয়া আইন বিরোধী কোনো আইন পাস করব না। আমরা সরকারে ছিলাম, কোনো আইন পাস করি নাই। কিন্তু এই কথা বলা যায় কি যে, আমি শরীয়া আইনের বিরোধিতা করেছি, ইসলামী মূল্যবোধের বিরোধিতা করেছি? এসব কথা বলার অর্থ হচ্ছে যে, ব্যক্তিগত আক্রমণ করা। যেটা আমি মনে করি যে, উনারা ভালো কাজ করেননি।’

তিনি বলেন, ‘উনারাদের সঙ্গে আমাদের কোনো সমস্যাই হয়নি। ২০ দলের যে ঘোষণাপত্র ছিল, সেটাতে বলা হয়েছিলো ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য একটা জোট এবং সেইভাবে এই আন্দোলন করেই নির্বাচনে যাওয়ার একটা ব্যাপার ছিল। সেখানে কিন্তু শরিক যেকোনো দল তার নিজস্ব রাজনীতি করবে, তার নিজস্ব কথা বলবে। এখানে একটা দলের রাজনীতি আরেকটার ওপরে চাপিয়ে দেওয়ার কোনো ব্যাপার নেই।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রধান মাওলানা নুর হোসাইন কাশেমী অত্যন্ত শ্রদ্বেয় মানুষ ছিলেন। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে শ্রদ্ধা করতাম, একজন সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক লোক বলতে যা বোঝায়, তিনি তাই ছিলেন। বড় আলেম, ইসলামী চিন্তাবিদও ছিলেন। নুর হোসেইন কাশেমীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে শোকবাণী প্রদান ও ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় সফরকে কেন্দ্র করে আলেম-উলামাদের গ্রেফতার ও মামলা দায়ের ঘটনার পরপরই বিবৃতি প্রদান ও বিশেষ সংবাদ সম্মেলন বিএনপি একাধিকবার করেছে।’

বিজ্ঞাপন

‘কীভাবে উনি (বাহাউদ্দীন জাকারিয়া) বললেন, আমরা কোনো কিছু করিনি। এটা কেন ও কীভাবে বললেন আমি জানি না। উনি সত্য কথা বলেননি। মানুষ আশা করে আলেম-উলামারা সত্য কথা বলবেন’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

জমিয়ত উলামা ই ইসলাম টপ নিউজ বিএনপি মির্জা ফখরুল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর