ঢাকা: আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী দাবি করেছেন, পরীমনির ক্যারিয়ার নষ্ট করতে প্রতিহিংসার বশে তার বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। তার অপরাধ খুবই সামান্য। তিনি চক্রান্তের শিকার। বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) পরীমনিসহ চার আসামির রিমান্ড শুনানিতে তার পক্ষের এই আইনজীবী এমন দাবি করেন।
এদিন চিত্রনায়িকা পরীমণি ও রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার চলচ্চিত্র প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ চারজনের বিরুদ্ধে করা পৃথক দুই মামলায় চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালত রাতে শুনানি শেষে এই রিমান্ডের আদেশ দেন। মামলাগুলোর অপর দুই আসামি হলেন- আশরাফুল ইসলাম দিপু ও সবুজ আলী।
এর আগে, বনানাী থানার পুলিশ চার আসামিকে আদালতে হাজির করে পৃথক দুই মামলায় সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। প্রথমে পরীমনি ও তার সহযোগী দিপুর মাদক মামলায় রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানির শুরুতেই রাষ্ট্রপক্ষের ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউট আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘পরীমনির বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার করা হয়েছে। ভয়ংকর এলএসডি ও আইস পাওয়া গেছে। কেন তার বাড়িতে এত মাদক ছিল? এগুলোর মূলে কে রয়েছে, সে বিষয়ে তদন্তের প্রয়োজন। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। এই মাদকের পরিণতি হয় সর্বনাশা। আসামিদের মত মুখোশধারীদের অপকর্মে সমাজ কলুষিত হচ্ছে। এজন্য আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
এরপর পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী বলেন, ‘পরীমনি একজন স্বনামধন্য চিত্রনায়িকা। সবাই তাকে চেনেন। তাকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তা দুঃখজনক। সাজানো ঘটনায় তাকে গেফতার করা হয়েছে। ক্যারিয়ার নষ্ট করতে এ মামলা। প্রতিহিংসার বশে মামলাগুলোর দায়ের করা হয়েছে। তার অপরাধ খুবই সামান্য। তিনি চক্রান্তের শিকার। তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন প্রার্থনা করছি।’
আরও পড়ুন:
- পরীমনি ৪ দিনের রিমান্ডে
- র্যাবের হাতে আটক পরীমনি
- পরীমনির বাসায় র্যাবের অভিযান চলছে
- পরীমনি ও রাজের বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা
- পরীমনি আটক, নেওয়া হলো র্যাব সদর দফতরে
- পরীমনির বিষয়ে ‘সুনির্দিষ্ট’ অভিযোগ রয়েছে— র্যাব
- শুধু মদ নয়, পরীমনির বাসায় মিলেছে আরও ভয়ংকর মাদক
- এবার প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযানে র্যাব
এরপর আদালত পরীমনি ও তার সহযোগীর চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। এরপর রাজ ও সবুজ আলীর রিমান্ড শুনানি হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। জিজ্ঞাসাবাদে পরীমনি রাজের নাম জানায়। পরে রাজের বাসায় অভিযান চালিয়ে মাদক ও তার সহযোগীসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় রাজের পক্ষে আইনজীবীরা বলেন, রাজ এফবিসিসিআই সদস্য এবং একজন সিআরপি। তার যাতায়াত সরকারের নজরে পড়বে। তার মাদক সেবনের লাইসেন্স আছে। মদ তিনি রাখতেই পারেন। কোনো ইয়াবা তার বাসা থেকে পাওয়া যায়নি। যেসব মাদক উদ্ধারের কথা কথা বলা হচ্ছে তাও পাওয়া যায়নি। তার রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করছি।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রাজ ও সবুজের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বিকেল ৪ টার পর পরই বনানীর ১২ নম্বর রোডের পরীমনির বাসায় অভিযান পরিচালনা করে র্যাব। এরপর তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। আর এর পর পরই অভিযান চালানো হয় রাজের বাসায়।