‘জিয়ার কবরে তার লাশ নেই, সেটা নিয়ে এত নাটক কেন বিএনপির?’
২৬ আগস্ট ২০২১ ১৫:৪৫
ঢাকা: চন্দ্রিমা উদ্যানে মারামারির ঘটনায় বিএনপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবরে তার লাশ নেই। জিয়ার কবর নেই। খালেদা জিয়াও ভালোভাবে জানেন। তাহলে সেটা নিয়ে এত নাটক করে কেন বিএনপি?
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) সকালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (উত্তর) এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ (দক্ষিণ) কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রান্তে যুক্ত ছিলেন।
১৯৭৫ সালের পর দীর্ঘ ২১ বছর দেশকে পিছিয়ে রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে তৎকালীন স্বৈরশাসকদের কঠোর সমালোচনা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘২১টা বছর বাংলাদেশে তো কোনো উন্নয়ন হয়নি। ওই যতটুকু জাতির পিতা করে রেখেছিলেন। ২১ বছরে সেখান থেকেও বাংলাদেশ পিছিয়ে যায়। আমিও যখন বাংলাদেশে আসি তখন কী দেখি? সেই ক্ষুধার্ত নর-নারীর ছিন্ন কাপড়, বিদেশ থেকে পুরানো কাপড় এনে এদেশের মানুষকে পরানো হচ্ছে। রোগে ধুঁকে ধুঁকে মানুষ মারা যাচ্ছে। খাবার নেই, চিকিৎসা নেই, শিক্ষা নেই।’ এগুলোর জন্য জিয়াউর রহমানই সব থেকে বেশি দায়ী ছিলেন বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে আরও বলেন, ‘জিয়া নাকি গণতন্ত্র দিয়েছে! যে দেশে প্রতিরাতে কারফিউ থাকে। সেটা আবার গণতন্ত্র হয় কীভাবে? ভোট চুরি থেকে সবকিছুই কিন্তু এই জিয়াউর রহমান শুরু করেছে। সংবিধান লঙ্ঘন করা, সেটাও জিয়াউর রহমান করেছে। আমাদের সৌভাগ্য যে হাইকোর্টে একটি রায় দিয়েছে। জিয়ার ক্ষমতা দখল, এরশাদের ক্ষমতা দখল, মার্শাল’ল দিয়ে যে ক্ষমতা দখল- সেগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের মাজারে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বিএনপি নেতাদের কর্মীদের মারামারির ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবরে তার লাশ নেই। জিয়ার কবর নেই। খালেদা জিয়াও ভালোভাবে জানেন। তাহলে সেটা নিয়ে এত নাটক করে কেন বিএনপি? খালেদা জিয়া বা তারেক জিয়া কি বলতে পারবেন, তারা স্বামী বা বাবার লাশ দেখেছেন? গুলি খাওয়া লাশ তো দেখাই যায়। তারা কি দেখেছেন কখনো, বা কোনো একটা ছবি? দেখেনি। কারণ, ওখানে কোন লাশ ছিল না।’
তিনি বলেন, ‘ওখানে একটা বাক্স (কফিন বাক্স) আনা হয়েছিল। এরশাদের মুখ থেকেই শোনা, ওই বাক্সের ফাঁক দিয়ে দেখা গেছে যে, সেই লাশের কমব্যাড ড্রেস পরা ছিল। জিয়াউর রহমান তখন প্রেসিডেন্ট, তখন তো সে কমব্যাড ড্রেস পরে না। এটা কি বিএনপির লোকরা জানে না? সেখানে যেয়ে তাদের মারামারি করার চরিত্র এখনও যায়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু এই স্বাধীনতা বিরোধীদের ওপর দেশীয়-আন্তর্জাতিকভাবে একটি সমর্থন ছিল’— এটাই দুভার্গ্যওে বলেও আক্ষেপ প্রকাশ করেন তিনি।
আলোচনা সভার শুরুতে ১৫ আগস্ট নির্মম হত্যাকাণ্ডে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সভার শেষে নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রুহুল, উত্তর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাদের খান, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল, উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আখতার হোসেন, উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা। গণভবন প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম