ঘরে ঘরে পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
৩০ অক্টোবর ২০২১ ১৩:৩৮
ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সবার ঘরে ঘরে পুলিশ দেওয়া সম্ভব নয়। এত সংখ্যক পুলিশ সদস্য নেই। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় জড়িত সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের শহিদ শিরু মিয়া হলে কমিউনিটি পুলিশিং ডে’র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কমিউনিটিং পুলিশের অনেক দায়িত্ব উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শান্তি রক্ষার জন্য তো ঘরে ঘরে পুলিশ দিতে পারি না। ঘরে ঘরে যে জনগণ আছেন তারা যদি রিয়েল টাইম ইনফরমেশন দিতে পারেন তাহলে অনেক ঘটনা থেকেই আমরা বাঁচতে পারি।’
পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট বড় আকারে করতে হবে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘দেশে সাইবার ক্রাইম (অপরাধ) যেভাবে উন্মোচিত হচ্ছে তা ধারণার বাইরে। সাইবার অপরাধ দমনে আমরা সেভাবেই পুলিশকে তৈরি করছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীতে সাইবার ইউনিট আমরা করেছি, কিন্তু সেটা ছোট আকারে আছে। সাইবার ইউনিট বড় আকারে করতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। অনেক দূর পর হেঁটে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘টেকনোলোজি ব্যবহারের ভালো দিকও আছে আবার খারাপ দিকও আছে। তবে আমাদের ভালো দিকটা বেছে নিতে হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সম্প্রতি দেখেছি, এক ধরনের উসকানি জনগনকে উদ্বুদ্ধ করেছিল একটা ভায়োলেন্সের দিকে। সেটাও কিন্তু আমাদের জনগণ ও পুলিশ একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ করেছে। আমরা সেই জায়গা থেকে নিস্তার পেয়েছি। তবে বড় ধরনের ঘটনা ঘটে যেতে পারতো। কারণ যে যার ধর্ম হৃদয় দিয়ে পালন করি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পুলিশ বাহিনী সেই এলাকার জনগণের সঙ্গে মিলে অপরাধীদের ধরে নিয়ে আসছে। তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন জনগণও তাদের ধিক্কার দিচ্ছে। এটাই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের দায়িত্ব। আমরা যেটা চাচ্ছি সেই কাজ পুলিশ ও জনগণ করে দিচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাহিনীতে দুই লাখের ওপর পুলিশ সদস্য। আমরা সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করছি বলে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারছি।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, পুলিশ বাহিনী তোমরা জনতার পুলিশ হও। আজ ধীরে ধীরে পুলিশ জনতার পুলিশ হতে চলেছে। দেশে যখন জঙ্গির উত্থান হয়েছে, আগুন সন্ত্রাসের উত্থান হয়েছে পুলিশ বাহিনী তা মোকাবিলা করেছে। এছাড়া সম্প্রতি যে অতিমারির দৃশ্য দেখলাম, ছেলে তার বাবা-মাকে হাসপাতালে ফেলে রেখে এসেছে- এই পুলিশ বাহিনীর সদস্যরাই তাদের দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করেছে। তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা কাজ করছে। সেজন্যই আমরা অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পেরেছি।’
কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘যারা বিভিন্ন জায়গায় পুলিশকে সহযোগিতা করছেন, সেভাবেই সহযোগিতা করুন। আপনারা কমিউনিটিকে সজাগ রাখুন। কেউ ক্রাইম করার আগেই তাকে বলুন, ক্রাইম করলেই জেলে যেতে হবে। ক্রাইম করলে তোমাকে কিন্তু চিহ্নিত করা হবে। আপনারা এই আবেদনটি রাখেন। তারপর অবশ্যই ক্রাইমকে দমন করতে পারব।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মোহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও লেখক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
সারাবাংলা/ইউজে/একেএম/পিটিএম
কমিউনিটি পুলিশিং ডে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল