গণজাগরণের মাধ্যমেই জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে: রব
৩১ অক্টোবর ২০২১ ২১:৩৫
ঢাকা: জাতিরাষ্ট্র সুরক্ষার প্রশ্নে জাতীয়তাবাদের পুনরুজ্জীবন জরুরি বলে মনে করছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব। আর সেই গণজাগরণের মাধ্যমে পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আ স ম আবদুর রব বলেন, রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে যেভাবে অসাংবিধানিক ও অনৈতিক জালিয়াতি চক্রে আবদ্ধ করা হয়েছে, জাতিকে যেভাবে নৈতিকভাবে দেউলিয়া করে ফেলা হয়েছে, যেভাবে নির্বাচনকে পাতানো খেলায় রূপান্তর করা হয়েছে, যেভাবে ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দেওয়া হয়েছে, যেভাবে অনৈক্য সংঘাতকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে— তাতে জাতিরাষ্ট্র সুরক্ষার প্রশ্নে জাতীয়তাবাদের পুনরুজ্জীবন জরুরি। জাতি আজ রাজনীতি, অর্থনীতি, জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-সংস্কৃতিতে দেউলিয়াত্বের দ্বারপ্রান্তে। এ থেকে মুক্তি আবশ্যক। টেবিলে বসে নয়, গণজাগরণের মাধ্যমে জাতীয় শক্তির পুনরুজ্জীবন করে জাতীয় সরকার গঠন করতে হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সভাপতির প্রারম্ভিক বক্তব্যে আ স ম আবদুর রব এসব কথা বলেন। ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থা মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নবগঠিত গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়াসহ অন্যরা।
অনুষ্ঠানে আ স ম আবদুর রব বলেন, বাংলাদেশ এখন রাজতন্ত্র চলছে। এই রাজতন্ত্রের হাত থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হচ্ছে গণজাগরণের মাধ্যমে জাতীয় শক্তির পুনরুজ্জীবন ঘটানো। এই পুনরুজ্জীবিত শক্তিই ‘জাতীয় সরকার’ গঠন করবে। এটি হবে সব সমাজশক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক একটি সরকার। জাতীয় সরকার সংবিধানের চেতনাকে সমুন্নত করবে এবং সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হবে।
জেএসডি সভাপতি আরও বলেন, একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জনের পর সশস্ত্র যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব শক্তি ও দলকে নিয়ে ‘বিপ্লব জাতীয় সরকার’ গঠনের দাবি করেছিলাম। সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে দলীয় সরকার গঠন করায় জাতিকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছে এবং বঙ্গবন্ধুকেও আমরা সুরক্ষা দিতে পারিনি।
সভায় জেএসডি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও সশস্ত্র যুদ্ধের চেতনার প্রতিফলন ঘটেনি। একদলীয় বাকশাল গঠন করেও আওয়ামী লীগ গভীর সংকট উত্তরণ করতে পারেনি। বরং সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে। সেই অপশাসনের ধারাবাহিকতায় রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থা এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এই দুর্বৃত্ত বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে শাসনব্যবস্থায় শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই আজকের রাজনীতির প্রধান করণীয়, যা বাঙালির তৃতীয় জাগরণকে গতিশীল করবে।
ফাইল ছবি
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর