কলেজছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে রহস্য, থানায় হত্যার অভিযোগ দায়ের
২ নভেম্বর ২০২১ ০৯:৫১
রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটিতে কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (১ নভেম্বর) রাতে রাঙ্গামাটির কোতোয়ালি থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন পূর্ণিমা চাকমার মামাতো ভাই পলাশ চাকমা।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমার এক আত্মীয় অভিযোগ জমা দিয়েছেন। সেটা আছে এবং আগেই একটি অপমৃত্যু মামলা আছে। পুলিশ তদন্ত করছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিষয়টি আর পরিস্কার হবে।
মামলার অভিযোগে পলাশ চাকমা বলেন, ‘গত শুক্রবার দুপুর দেড়টায় (২৯ অক্টোবর) মল্লিকা দেওয়ান ও অঞ্জলী চাকমা আমার বোন পূর্ণিমা চাকমার লাশ রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাতে থাকে। পরে আমি পূর্ণিমার গৃহকর্ত্রী মল্লিকা দেওয়ান ও নিকিতা দেওয়ানের কাছে মৃত্যুর বিষয়টি জানতে চাইলে তাদের রহস্যজনক উত্তর ও আচরণে বুঝতে পারি আমার বোনকে খুন করা হয়েছে।’
‘পূর্ণিমাকে হত্যা করে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়েছে অভিযুক্তরা’
পলাশ চাকমা বলেন, ‘আমার বোনকে খুন করে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচারের পর মল্লিকা দেওয়ান ও তার পরিবারের লোকজনকে আমাদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে টাকা দিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমরা তো টাকা দিয়ে দফারফা করতে চাই না। টাকা দিয়ে তো বোনকে ফিরে পাব না। আমরা বোন হত্যার বিচার চাই। সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিচার চাই।’
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কলেজছাত্রী পূর্ণিমাকে অচেতন অবস্থায় রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা শুনে উধাও হয়ে যান হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা। ঘটনার পরদিন শনিবার দুপুরে পূর্ণিমা চাকমার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।
কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা জেলার জুরাছড়ি উপজেলার ৪ নম্বর দুর্গম দুমদুম্যা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বগাখালী এলাকার সাধন চাকমার মেয়ে। সে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। পড়ালেখার কারণে জেলা শহরের রাজবাড়ী এলাকার মল্লিকা দেওয়ানের বাসায় থাকতো। পূর্ণিমাকে মল্লিকা দেওয়ানের বাসায় রাখার ব্যবস্থা করেন দেন জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা অঞ্জলী চাকমা (গান্ধী)। এ ঘটনার পর থেকে মল্লিকা দেওয়ান ও গান্ধী চাকমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে সোমবার সকালে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ তুলে রাঙ্গামাটি শহরে বিক্ষোভ করেছে রাঙ্গামাটি সরকারি মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও পূর্ণিমার স্বজনেরা।
সারাবাংলা/এমও