লালমনিরহাটে জমে উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন
৮ নভেম্বর ২০২১ ২১:৩০
লালমনিরহাট: আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট ১১ নভেম্বর। এ নির্বাচনে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারি উপজেলার ৮ ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে মোট ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৫০ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে ৮৯ হাজার ৬২৫ জন পুরুষ এবং ৮৮ হাজার ৬২৫ জন নারী ভোটার।
নির্বাচনে জয় পেতে ভোটারদের দ্বারে গিয়ে ভোট প্রত্যাশা করছেন প্রার্থীরা, ভোটারদের দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা করে জানাচ্ছেন নির্বাচনে জয়ী হলে কেমন ইউনিয়ন পরিষদ গড়তে চায় তারা।
উপজেলার ১নং দুর্গাপুর ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬ জন প্রার্থী। ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩১ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১২ জন প্রার্থী।
চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তায় বর্তমান চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান সালেককে পেছনে ফেলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া আসাদুজ্জামান নান্নু। কাছাকাছি অবস্থানে স্বতন্ত্র প্রার্থী এছরাউল ইসলাম এবং বিদ্রোহী প্রার্থী ফিরোজুর রহমান নান্নু।
নৌকার মাঝি হওয়ায় আসাদুজ্জামান নান্নু ইউনিয়নবাসীকে দেখাচ্ছেন ইউনিয়নের ব্যাপক উন্নয়নের স্বপ্ন। স্বতন্ত্র প্রার্থী এছরাউল প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মাদকমুক্ত ইউনিয়ন গড়ার আর বিদ্রোহী প্রার্থী ফিরোজুর রহমান নান্নু দিচ্ছেন আদর্শ ইউনিয়ন গড়ার প্রতিশ্রুতি।
২নং ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৩ জন, ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩২ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১৫ জন প্রার্থী।
ভেলাবাড়ি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বরাবরের মত জনমতে এগিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী।উ ন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে নৌকায় ভোট প্রত্যাশা করছেন তিনি। তবে অনেকেই বলছেন এবার জয়ী হতে খানিকটা বেগ পেতে হবে নৌকার। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজাহার আলী হাতপাখা প্রতিক নিয়ে ইউনিয়নবাসীর দ্বারে দ্বারে হাজির হচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে। নির্বাচিত হলে মাদক, ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত ইউনিয়ন গড়ার কথা দিচ্ছেন তিনি।
৩নং কমলাবাড়ী ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৪ জন, ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩৮জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১১ জন প্রার্থী।
ইউনিয়নবাসীর অনেকেই বলেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী নৌকার মাঝি মাহমুদ ওমর চিশতী এবং বর্তমান চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আলালের মাঝে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি।
৪নং সারপুকুর ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৭ জন। ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৪৯জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১৫জন প্রার্থী।
ভোটাররা বলছেন, চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত কে হবে তা এবার স্পষ্ট করে বলা মুশকিল।
৫নং সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৬ জন প্রার্থী, ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১৫ জন।
এ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকা আব্দুস সোহরাব হোসেন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছি। নির্বাচনে জয়ী হলে সরকারি অনুদানের পাশাপাশি নিজের অর্থায়নে এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং রাস্তা মেরামতের কাজ করবো।’
৬নং ভাদাই ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৫ জন প্রার্থী, ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩৬ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১২ জন।
এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে জনমতে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন কৃষ্ণকান্ত রায় বিদুর। নৌকার মাঝি হওয়ায় ইউনিয়নবাসীকে দেখাচ্ছেন ব্যাপক উন্নয়ন করার স্বপ্ন। নির্বাচিত হলে গড়তে চান একটি আদর্শ ইউনিয়ন।
৭নং পলাশী ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৭ জন প্রার্থী, ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৫০ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ২৭ জন।
পলাশী ইউনিয়নে নৌকার মাঝি এবং বর্তমান চেয়ারম্যান শওকত আলী বলছেন, তার সময়ে সকল ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন হয়েছে তা আগে হয়নি। পুনরায় নির্বাচত হলে উন্নয়ন কাজগুলো অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন জনগণকে। অন্যান্য বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
৮নং মহিষখোচা ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ৭ জন প্রার্থী, ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ৩২ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন করছেন ১৮ জন।
স্থানীয়রা বলছেন, মাঠে দু’জনের অবস্থান ভালো। তাই কে জয়ী হবে তা বলা মুশকিল। তবে জনসংযোগ ও উঠান বৈঠকে ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয়ী হতে মরিয়া উভয়ই। নৌকার মাঝি এবং বর্তমান চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী সুযোগ চাচ্ছেন উন্নয়নমূলক কাজ অব্যাহত রাখার আর প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী মমতাজ উদ্দিন ভোটারদের দিচ্ছেন ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়ন এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন করার প্রতিশ্রুতি।
সারাবাংলা/এমও