Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাগরের বুক ছুঁয়ে বিমান নামবে কক্সবাজারে

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ নভেম্বর ২০২১ ০৮:২৯

ছবি: সারাবাংলা

কক্সবাজার: সাগরের বুক ছুঁয়ে বিমান নামবে কক্সবাজারে। এজন্য বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আর সমুদ্র ছুঁয়ে তৈরি হওয়া রানওয়ের কাজ শেষ হলে বদলে যাবে এ বিমানবন্দরের চিত্র। গত ২৯ আগস্ট ভিডিও কনফোরেরেন্সর মাধ্যমে কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ উদ্ধোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে বড়বড় সব বিমান উঠানামা করবে কক্সবাজার বিমানবন্দরে। এমনকি দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কক্সবাজার বিমানবন্দর হবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ফলে এই বিমানবন্দরে উঠানামা করবে বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর, বোয়িং ৭৪৭ বিমান এবং এয়ারবাসসহ নামকরা সব এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ।

ইতোমধ্যে বিমানবন্দরটির টার্মিনাল ভবন সাজানো হচ্ছে ঝিনুক আকৃতিভাবে। আর কক্সবাজার বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক হলে সেখানে সরাসরি বিদেশি পর্যটক যাবেন। ফলে বর্তমানের মতো শাহজালাল বিমানবন্দর হয়ে বিদেশি পর্যটকরা আর কক্সবাজারে যাবেন না। তখন সরাসরি কক্সবাজারেই অবতরণ করবে বিদেশি সব এয়ারলাইন্স।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরে ইতোমধ্যে নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে আনুষাঙ্গিক কাজ। এছাড়া এয়ারফিল্ড গ্রাউন্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপনসহ অন্যান্য কাজও শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মানের রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজও শুরু হয়েছে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের চলছে নির্মাণ কাজ. ছবি: সারাবাংলা

কক্সবাজার বিমানবন্দরের চলছে নির্মাণ কাজ. ছবি: সারাবাংলা

এদিকে সিভিল এভিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, কক্সবাজার বিমানবন্দরের বর্তমান রানওয়ে রয়েছে ৯ হাজার ফুট। এটি বেড়ে আরও এক হাজার ৭০০ ফুট থেকে বেড়ে হবে ১০ হাজার ৭০০ ফুট। আর নতুন করে সম্প্রসারণ হতে যাওয়া রানওয়েরে এক হাজার ৩০০ ফুটই থাকবে সমুদ্রের বুকে। এমনকি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের পর কক্সবাজার হবে চতুর্থ কোনো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেক্ষেত্রে শাহজালাল বিমানবন্দর দ্বিতীয় বিমানবন্দরের তালিকায় নাম লেখাবে। কারণ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে ১০ হাজার ৫০০ ফুট। আর কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে হতে যাচ্ছে ১০ হাজার ৭০০ ফুট।

এর আগে ২০১৭ সালে সম্প্রসারিত রানওয়েতে বিমানের বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। কক্সবাজার বিমানবন্দরের মহেশখালী চ্যানেলের দিকে জমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে সম্প্রসারিত হচ্ছে এই রানওয়ে। প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। যার পুরোটাই অর্থায়ন করছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক)। ২০২৪ সালের মে মাসে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য সিভিল এভিয়েশন চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি চীনের চ্যাংজিয়াং ওয়টারওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো (সিওয়াইডব্লিউইবি) ও চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশনের (সিসিইসসি) সঙ্গে চুক্তিও করেছে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ উদ্ধোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: সারাবাংলা

কক্সবাজার বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণের কাজ উদ্ধোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: সারাবাংলা

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, প্রথমে এই বিমানবন্দর নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি নির্দেশনা ছিল। সেটি এখন নেই। আর যে পর্যন্ত রানওয়ে করা হচ্ছে এতে পরিবেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না। একইসঙ্গে কক্সবাজার বিমানবন্দর যোগাযোগ ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে রাখবে অনেক ভূমিকা। রানওয়ের কাজ শেষ হলে এটি হবে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।

এ বিষয়ে বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সারাবাংলাকে বলেন, কক্সবাজারকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণসহ নানা প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেজন্য কাজও ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। রানওয়ে সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলে যাত্রী চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি কক্সবাজারের রূপও বদলে যাবে। আমরা চাই, বিদেশি পর্যটকরা যেন অনায়াসে কক্সবাজারে আসতে পারে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে এবং সেই মোতাবেক কাজও শুরু হয়েছে।

সারাবাংলা/এসজে/এনএস

কক্সবাজার বিমানবন্দর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর