নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে মহামারি পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে কনফারেন্স
১২ নভেম্বর ২০২১ ১৭:০২
ঢাকা: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মহামারী পরবর্তী বিশ্বের জন্য দক্ষিণ এশিয়ায় নীতিনির্ধারকদের প্রস্তুত করণ’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী এনএসইউ– এনএএসপিএএ দক্ষিণ এশিয়া কনফারেন্স শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে এই ভার্চুয়াল কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন। এটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ; নেটওয়ার্ক অব স্কুল অব পাবলিক পলিসি, অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এনএএসপিএএ), যুক্তরাষ্ট্র এবং জে এস ডাব্লিউ স্কুল অব পাবলিক পলিসি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট, আহমেদাবাদ (আইআইএমএ), ভারত।
এই কনফারেন্সের লক্ষ্য হলো কোভিড-১৯ মহামারী থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষণীয় বিষয়সমূহ তুলে ধরা এবং মহামারী পরবর্তী বিশ্বের জন্য নীতিনির্ধারকদের প্রস্তুত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করার জন্য শিক্ষাবিদ, অনুশীলনকারী, সুশীল সমাজের সদস্য এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের একত্রিত করা। এই ভার্চুয়াল কনফারেন্সে বিশ্বের ১৩টি দেশ এবং ৭৮টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ১৪টি প্যানেল আলোচনা ও ৮৭টি গবেষণাপত্র উপস্থাপিত হচ্ছে।
উদ্বোধনী মূল বক্তা ছিলেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। বিশেষ অতিথি ছিলেন আজিম উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ট্রাস্টি, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ; ড. ত্রিপর্ণা ভাসাভাদা, চেয়ার, এনএএসপিএএ সাউথ এশিয়া; মিজ. লরেল ম্যাকফারল্যান্ড, সিনিয়র ফেলো, এনএএসপিএএ, যুক্তরাষ্ট্র; অধ্যাপক এরল ডি’সুজা, পরিচালক, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, আহমেদাবাদ (আইআইএমএ), ভারত। উদ্বোধনী সেশনের সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম।
‘স্বাস্থ্যখাতের কিছু দুর্বলতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ কোভিড-১৯ এর প্রতিকূল প্রভাবগুলো বিশ্বের অন্যান্য তুলনায় ভালোভাবে মোকাবিলা করেছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। তিনি আন্তর্জাতিক কনফারেন্সটিকে অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে প্রশংসা করেন এবং আশা করেন যে এই ভার্চুয়াল কনফারেন্সে যে অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হবে তা দক্ষিণ এশিয়ার নীতিনির্ধারকদের মহামারী পরবর্তী বিশ্বের জন্য প্রস্তুত হতে সহায়তা করবে। তিনি এই কনফারেন্সের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
উদ্বোধনী মূল বক্তা ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের উপস্থাপিত প্রবন্ধের শিরোনাম ছিল ‘মহামারী পরবর্তী দক্ষিণ এশিয়া: নীতিনির্ধারক জন্য ছয়টি শিক্ষা।’
তিনি বলেন, কো‘ভিড-পরবর্তী সময়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে জনস্বাস্থ্য অবকাঠামোর উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সম্প্রসারণে কাজ করা উচিত। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতার কাঠামো এবং পদ্ধতিকে শক্তিশালী করার জন্য এই অঞ্চলের দেশগুলোর একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে জনস্বাস্থ্য, জলবায়ু, অভিবাসন, সংযোগ এবং অর্থ সংক্রান্ত আঞ্চলিক সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে হবে।’
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ ট্রাস্টির চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ বলেছেন যে এই কনফারেন্সের আয়োজন মহামারী পরবর্তী দক্ষিণ এশিয়ার সরকারী ও বেসরকারী নীতিনির্ধারকদের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক।
প্লেনারী সেশনের বক্তা ছিলেন ইয়ামিনী আইয়ার, প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী, সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ, ভারত। তিনি মহামারিকালীন ভারতের সঙ্কটগুলো এবং রাষ্ট্র-নাগরিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব তুলে ধরেন ।
এসআইপিজির পরিচালক ড. তৌফিক এম হকের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়। আর এই অনুষ্ঠান শেষ হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলামের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে । তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন যে, আমাদের ভবিষ্যৎ মহামারীর জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার উপযুক্ত সময় এসেছে। তিনি এই কনফারেন্সের সফলতার জন্য শুভকামনা জানিয়েছেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা এবং শিক্ষার্থীরা ছিলেন।
সারাবাংলা/একে