মাঠে পাকিস্তানের পতাকায় রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি দেখছে ৫ যুব সংগঠন
২৩ নভেম্বর ২০২১ ১৮:২৭
ঢাকা: মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ চলাকালে গ্যালারিতে পাকিস্তানের পতাকা ও জার্সির উপস্থিতিতে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে বলে মনে করছে ক্রিয়াশীল পাঁচ যুব সংগঠন।
এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো বলছে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী চলাকালে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানি পতাকা ও জার্সি প্রদর্শনের মধ্যে রাজনৈতিক দুরভিসন্ধি রয়েছে। এর দায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকেই (বিসিবি) নিতে হবে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) পাঁচ যুব সংগঠন এক যৌথ বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে। পাঁচ সংগঠন হলো— বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, জাতীয় যুব জোট, বাংলাদেশ যুব আন্দোলন ও জাতীয় যুব ঐক্য।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশের পাকিস্তানি সমর্থক বিরোধী অবস্থান পুলিশি বাধায় পণ্ড
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের গণহত্যা এখনো বিস্মৃত হইনি। একাত্তরে পাকিস্তান বাহিনী পরাজিত হলেও তাদের দোসররা এখনো সক্রিয়। পাকিস্তান এখনো নিঃশর্ত ক্ষমা চায়নি এবং সে সময়ের লুণ্ঠিত সব সম্পদ ফেরত দেয়নি।
বিবৃতিতে যুব নেতারা বলেন, অনুশীলনের সময়ে পাকিস্তান দল মাঠে পাকিস্তানের পতাকা গেঁড়েছিল। এটি নজিরবিহীন, ধৃষ্টতাপূর্ণ ও অশোভন আচরণ। বিসিবি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এক্ষেত্রে লিখিত নির্দেশনা বা শর্ত আরোপিত না থাকায় আইনের ফাঁক গলে এমন কাণ্ড ঘটানো সম্ভব হলেও বিসিবির নিরবতা ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণকে উসকে দেবে। যেকোনো দেশের জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা ওই দেশের অফিসিয়াল অ্যাম্বাসেডর। ফলে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ কাঙ্ক্ষিত ছিল।
আরও পড়ুন- দেশের মানুষকে প্রতিপক্ষের পতাকা ওড়াতে দেখলে কষ্ট লাগে: মাশরাফি
তারা বলেন, কিন্তু বিসিবি বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। আরও গুরুতর যে অপরাধটি বিসিবির সরাসরি প্রশ্রয়ে ঘটে গেল তা হলো— পাকিস্তানের জার্সি পরিয়ে ও পতাকা হাতে দিয়ে একদল ভাড়াটে মানুষকে গ্যালারিতে বসানো হলো রীতিমতো বাণিজ্যিক অর্থায়নে। কথিত সমর্থকদের দিয়ে পাকিস্তানের গ্যালারি সাজানো হয়েছে কার পরামর্শে— সেটিও অনুসন্ধানের দাবি রাখে।
মাঠেও পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যুব নেতারা। তারা বলেন, খেলা চলাকালীনও মাঠে পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা আমাদের খেলোয়াড়দের সঙ্গে একের পর এক অসৌজন্যমূলক ও ধৃষ্টতাপূর্ণ আচরণ করছেন। এতে এ কথা মনে করা অসঙ্গত হবে না যে পুরো বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত এবং বিশেষ একটি মহলের প্রশ্রয়েই ঘটেছে।
আরও পড়ুন- বাংলাদেশে নয়, খেলা যেন হচ্ছে পাকিস্তানে!
বিবৃতিতে পাঁচ যুব সংগঠন বলছে, বিসিবি সভাপতি ও তার তল্পিবাহকেরা দেশের খেলোয়াড়দের শায়েস্তা করতে এতটাই ব্যস্ত যে বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশ ও দেশের খেলোয়াড়েরা অসম্মানিত হলে তাদের যেন কিছুই আসে যায় না। দেশের ক্রিকেট ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে সভাপতিসহ তার তল্পিবাহকদেরকে বিসিবি থেকে অপসারণ করা জরুরি। এ ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে ভবিষ্যতে দেশের যুবসমাজকে আরও সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।
যৌথ বিবৃতিতে সই করেছে বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর সভাপতি আলী খান কলিন্স ও সাধারণ সম্পাদক মোতাসিম বিল্লাহ সানি; বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি হাফিজ আদনাল রিয়াদ ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মাসুম; জাতীয় যুব জোটের সভাপতি রোকরুজ্জামান রোকন ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল কবির স্বপন; বাংলাদেশ যুব আন্দোলনের সভাপতি মো. শাহিদ আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক পল্লব পাল; এবং জাতীয় যুব ঐক্যের সভাপতি খায়রুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ সেলিম।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর
৫ যুব সংগঠনের যৌথ বিবৃতি গ্যালারিতে পাকিস্তানি পতাকা জাতীয় যুব ঐক্য জাতীয় যুব জোট পাকিস্তানি সমর্থক বাংলাদেশ যুব আন্দোলন বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন বাংলাদেশ যুব মৈত্রী মাঠে পাকিস্তানি পতাকা