ইসি আইন প্রণয়নে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা চেয়েছে জাসদ
২২ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:২৭
ঢাকা: সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভূমিকা চেয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। দলটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেছেন, পাঁচ বছর পর পর যেন ইসি গঠন করতে গিয়ে বিব্রত হতে না হয়, সে কারণেই তারা এই আইন প্রণয়ন এবং আইন প্রণয়নে রাষ্ট্রপতির ভূমিকা প্রত্যাশা করছেন।
বুধবার (২২ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন বিষয়ক সংলাপে অংশ নেওয়ার পর বঙ্গভবনের সামনে অপেক্ষমাণ গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা বলেন তিনি।
হাসানুল হক ইনু বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে পাঁচ বছর পর পর একটি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এ অবস্থা থেকে যেন স্থায়ী একটি সমাধান পাওয়া যায়, তার জন্য আমরা রাষ্ট্রপতির ভূমিকা প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে ভবিষ্যতে আইনি কাঠামো করতে রাষ্ট্রপতি যেন সরকারকে দিকনির্দেশনা দেন, আমরা সে কথা বলেছি।
আরও পড়ুন-
- রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপ শুরু আজ
- ইসি পুনর্গঠনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে জাপা
- ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চান রাষ্ট্রপতি
- আইন করা সম্ভব না হলে ইসি গঠনে অধ্যাদেশ চায় জাপা
- ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের দাবিতে অনড় থাকবে জাতীয় পার্টি
- সংলাপ নয়, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে আইন প্রণয়নের দাবি টিআইবির
- ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু সোমবার, প্রথম দিন থাকবে জাপা
- সার্চ কমিটিতে জাপার তালিকায় সিএজি-পিএসসি চেয়ারম্যান-২ বিচারপতি
- সংলাপকে স্বাগত, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান
আইন প্রণয়নের দায়িত্ব সংসদের— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জাসদ সভাপতি বলেন, আইন সংসদকেই করতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষক। সংবিধানের নির্দেশনা বাস্তবায়নে তিনি ভূমিকা রাখতে পারেন। আইন সরকারই করবে, সংসদই করবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি যেন সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে সরকারকে পরামর্শ দেন, আমরা সেটিই বলেছি।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। এ বিষয়ে সংবিধানে আইন প্রণয়নের কথা বলা আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ সেই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়নি। ফলে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রসঙ্গ এলেই বিব্রত হতে হয়। সব মহলকে বিব্রত হওয়ার হাত থেকে রেহাই দেওয়ার জন্যই আমরা রাষ্ট্রপতির দিকনির্দেশনা চেয়েছি।
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে গত সোমবার (২০ ডিসেম্বর) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। প্রথম দিন জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসেন তিনি। এক দিন বিরতির পর আজ জাসদকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সভাপতি হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল বিকেল ৪টার দিকে প্রবেশ করে বঙ্গভবনে। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার, কার্যকারী সভাপতি রবিউল আলম, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য মোশারেফ হোসেন, সহসভাপতি মীর হোসাইন আক্তার এবং সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে সংলাপ শেষে বেরিয়ে বঙ্গভবনের সামনে অপেক্ষমাণ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন জাসদ নেতারা।
সংলাপ আহ্বানের জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উল্লেখ করে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠনের এখতিয়ার সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির। তারপরও উনি জাসদসহ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সূত্রপাত করেছেন। এই উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। এই পদ্ধতিতে ইসি গঠন অংশগ্রহণমূলক হবে। একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন উপহার দিতে রাষ্ট্রপতির জন্য এই উদ্যোগ সহায়ক হবে।
ইনু আরও বলেন, সংবিধানে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করার কথা বলা আছে। কিন্তু সেই আইনি কাঠামো না থাকার কারণে অনুসন্ধান কমিটির (সার্চ কমিটি) মাধ্যমে ইসি গঠন তুলনামূলকভাবে ভালো উদ্যোগ।
সার্চ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে জাসদের পক্ষ থেকে কারও নাম প্রস্তাব করা হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে জাসদ সভাপতি ইনু বলেন, আমরা মনে করি— সার্চ কমিটি সাংবিধানিক বিভিন্ন সংস্থায় নিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আমরা মহাহিসাব নিরীক্ষক (কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল), আপিল বিভাগের বিচারপতিসহ কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করেছি।
সারাবাংলা/টিআর
ইসি আইন ইসি পুনর্গঠন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ রাষ্ট্রপতির সংলাপ হাসানুল হক ইনু