লক্ষ্যমাত্রার দ্বিগুণ সরিষা চাষ, ভালো দাম পাওয়ার আশা
৭ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:২৩
দিনাজপুর: ভোজ্যতেলের চাহিদার পাশাপাশি দাম বাড়ায় সীমান্তবর্তী হিলিতে বেড়েছে সরিষা চাষ। চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগুণ চাষ হয়েছে সরিষা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলনের পাশাপাশি দাম ভালো পাওয়ার আশা কৃষকদের। ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষি বিভাগের সহযোগিতার আগামীতে আরও সরিষার চাষ বাড়ানোর কথা বলছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
হিলির বিভিন্ন সরিষা মাঠ ঘুরে দেখা যায়, হলুদ ফুলে চেয়ে গেছে পুরো মাঠ। মাঠের পর মাঠ যেনো হলুদের গালিচা। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ।
হিলির কাদিপুর গ্রামের কৃষক সাফিয়ার রহমান বলেন, ‘আমন ধান কাটার পর প্রায় দুই আড়াই মাস আমাদের জমি পতিত থাকে। এসব জমি ফেলে না রেখে শুধু পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করে সরিষা বীজ বুনলে সার ও পানি সেচ ছাড়াই আমরা সরিষার ফলন পায়। খরচ ছাড়াই বাড়তি একটা ফসল আমাদের অনেক উপকারে দেয়।’
হরিহরপুর গ্রামের কৃষক মুক্তার হোসেন বলেন, ‘সরিষা চাষ করলে নিজের তেলের চাহিদা মিটবে এবং অতিরিক্ত সরিষা বাজারে বিক্রি করলে নিজের পরিবারের আয় হবে। তাই আমরা সরিষা চাষ করি। প্রতি বিঘাতে ৫ থেকে ৭ মণ করে আমরা সরিষা ফলন পাই। এতে আমাদের অনেক উপকার হয়। কারণ সরিষা বিক্রি করে আমরা আবার বোরো ধান চাষ করতে পারি।’
সিংড়াপাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল মতিন বলেন, ‘বাজারে সয়াবিন তেলের দাম অনেক বেশি। ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে ও অতিরিক্ত সরিষা বাজারে বিক্রি করবো বলে এবার আমি ৭ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সরিষার গাছ ভালো হয়েছে, আশা করছি ফলনও ভালো হবে। সরিষা চাষে লোকসান নেই যা পাবো সেটাই লাভ। তাই দিন দিন আমাদের এলাকায় সরিষার চাষ বাড়ছে।’
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আরজেনা বেগম বলেন, ‘দেশে ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে ও স্থানীয়ভাবে তেলের চাহিদা মেটাতে সরকারি সহযোগিতায় হাকিমপুরে এবার দ্বিগুণ সরিষার চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৮৩০ হেক্টর জমিতে। এর বিপরীতে ১ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা সরকারিভাবে সরিষা বীজ ও সার কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছি, যাতে সরিষার চাষ বাড়ে যে কারনে কৃষকরা আগ্রহ করে সরিষা চাষ করেছে। আমরা আশাবাদী, আগামীতে সরিষার চাষ আরও সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে কৃষকরা লাভবান হবেন।’
সারাবাংলা/এমও