মাইডাসে শুক্রবার থেকে ২ দিনের পণ্য প্রদর্শনী ‘আড্ডা চলে’

তাঁত, ব্লক, স্ক্রিন প্রিন্ট থেকে শুরু করে শিল্পীর হাতে আঁকা এক্সক্লুসিভ শাড়ি। সালোয়ার কামিজ থেকে শুরু করে পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক। গহনা, যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা শতভাগ অথেনটিক প্রসাধন সামগ্রী, বিভিন্ন ধরনের বই, গাছ, গহনা। এসবের সম্ভার নিয়েই রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে দুই দিনের মেলা ‘আড্ডা চলে’। এসব পণ্যের পসরার পাশাপাশি থাকছে দুই উদ্যোক্তার খাবারের আয়োজনও।

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) শুরুর অপেক্ষয় থাকা এই মেলাকে অবশ্য আয়োজকরা বলছেন পণ্য প্রদর্শনী। কারণ নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় মেলার মতো নিবিড় পরিসরে করা হয়নি এ আয়োজন। মাইডাসের বিশাল হলে কেবল আটটি স্টলে ১০ জন উদ্যোক্তা থাকবেন তাদের পণ্যের পসরা নিয়ে। মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

আয়োজকরা বলছেন, দুই দিনের ‘আড্ডা চলে’ আয়োজনে তাদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে। কেউ মাস্ক আনতে ভুলে গেলে তাকে বিনামূল্যে সেটি সরবরাহও করা হবে।

মাইডাস সেন্টারের এই প্রদর্শনীতে কোন কোন উদ্যোগ অংশ নিচ্ছে, তা দেখে নেওয়া যাক এক নজরে—

অরনীর

অন্য সব সাধারণ মেলার থেকে ‘আড্ডা চলে’ কোন দিক থেকে আলাদা, সেটি বলতে গেলে বলতে হবে গাছের পসরা নিয়ে উপস্থিত থাকা ‘অরনীর’র কথা। পটেড রেডি ইনডোর বা ছায়ার গাছ, অফিস ডেস্কে সাজিয়ে রাখার মতো ছোট ছোট গাছ থেকে শুরু করে বড়-মাঝারি আকারের গাছও থাকবে এ স্টলে। আফটার সেল সার্ভিস অর্থাৎ যত্ন আলোচনা আর ১৫ দিন পর্যন্ত গাছের রিপ্লেসমেন্ট সার্ভিস পাবেন ‘আড্ডা চলে’র ক্রেতারা। সব গাছেই থাকছে নিয়মিত দামের ওপর মূল্যছাড়। আর স্টলে অর্ডার করলে ফ্রি হোম ডেলিভারির সুবিধাও মিলবে।

ডোরেমি

যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা বিশ্বখ্যাত সব ব্র্যান্ডের পণ্য তিনটি ক্যাটাগরিতে পাওয়া যাবে এই স্টলে। টোটাল কেয়ার ক্যাটাগরিতে থাকছে স্কিন ও হেয়ার কেয়ার সামগ্রী। বেবি’স ব্রেথ ক্যাটাগরিতে থাকবে বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় লোশন, হেড-টু-টো ওয়াশ, ন্যাপি ব্যাগ, ওয়াইপস, শ্যাম্পুর মতো পণ্য। আর ইট গুডিতে থাকবে বিভিন্ন হেলদি খাবার আর ড্রিংকস— কর্ন ফ্লেকস, চিয়া সিড, কফি, ফ্লেভারড টি, হরলিক্স, মিল্ক শেক, স্প্রেড ইত্যাদি।

ঈহা

ঈহা অর্থ ইচ্ছা। মনের রঙগুলো ইচ্ছামতো কাপড়ের ক্যানভাসে নিয়ে আসার স্বপ্ন থেকেই ২০১৫ সালে  এ উদ্যোগের পথচলা শুরু। রঙতুলিতে আঁকা পোশাক দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও এখন নিজেদের আঁকা ডিজাইনগুলো স্ক্রিন, ব্লক ও বুননেও নিয়ে এসেছে ঈহা। পাশাপাশি বছরখানেক হলো যাত্রা শুরু করেছে ঈহার সাব ব্র্যান্ড ‘নৈ’। ঈহার পাশাপাশি তৈরি পোশাক ও ব্যাগ নিয়ে ‘নৈ’র নিজস্ব ডিজাইনের স্বতন্ত্র সব কাজ থাকবে আড্ডা চলেতে।

পটের বিবি

আড্ডা চলে প্রদর্শনী উপলক্ষে তৈরি কাপড় নিয়ে কিছু নিরীক্ষাধর্মী কাজ করছে পটের বিবি। সেই সঙ্গে খুব ভালো মানের কিছু হ্যান্ডলুম শাড়ি ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরতে চায় তারা। সাধারণত অনলাইনের ছবিতে বুননের এই পার্থক্য বোঝানো কঠিন। তাই ‘আড্ডা চলে’র ক্রেতাদের সামনে পটের বিবি তুলে ধরতে চায় এক্সক্লুসিভ ধরনের হ্যান্ডলুম শাড়ি। পাশাপাশি নিয়মিত শাড়ি, পাঞ্জাবি, টু পিস, রেডি ব্লাউজ, ব্লাউজপিসসহ অন্যান্য পোশাক তো থাকবেই।

রংধনু ক্রিয়েশন

মসলিনের ওপর হাতে আঁকা শাড়ি পেতে চাইলে ঢুঁ মারতে হবে রংধনু ক্রিয়েশনে। হাতে আঁকা শাড়ি, টু পিস, শাল, ক্যানভাস, কুশন কভার, ল্যাম্পশেড, হ্যান্ড পেইন্টেড কাঁচের বোতল, হুপ আর্ট এমব্রয়ডারি ও হাতে তৈরি নানা গয়না থাকবে এ স্টলে। সিড বিডস ও শেলের গয়না ছাড়াও এবারে হাতে সেলাই করা কিছু গয়নাও থাকছে নতুন আইটেম হিসেবে। ‘আড্ডা চলে’র ক্রেতারা রংধনু ক্রিয়েশনের সব পণ্যে পাবেন বিশেষ ছাড়।

গ্লুড টুগেদার

পোশাক কেনার পর এর সঙ্গে মিলিয়ে গয়না কিনতে চাইলে তাও মিলবে ‘আড্ডা চলে’তে। এর জন্য গ্লুড টুগেদারে থাকবে বৈচিত্র্যপূর্ণ গহনার সম্ভার। নান্দনিক নকশার এসব গহনা দেখতে চাইলে অবশ্যই যেতে হবে প্রদর্শনীতে।

বুকস অব বেঙ্গল

অন্য সব মেলার চেয়ে ‘আড্ডা চলে’কে অনন্য করেছে বুক অব বেঙ্গলের উপস্থিতি। মনের খোরাক মেটাতে থাকবে বইয়ের বিশাল ভাণ্ডার। সেখান থেকে কেবল নিজের পছন্দের বই বেছে নেওয়ার অপেক্ষা।

এবার খাবার প্রসঙ্গ। আড্ডা চলবে আর নানা ধরনের খাবার থাকবে না, তা তো হয় না। তাই খাবারের সমাহার নিয়ে থাকবে চিয়ারি শেফ ও পিঠা পার্বণ। টক, ঝাল, মিষ্টি থেকে শুরু করে দেশি-বিদেশি সব ধরনের খাবারই পাওয়া যাবে খাবারের স্টলে।

আয়োজকরা বলছেন, শুধু কেনাকাটা করতেই নয়, প্রদর্শনী দেখতেও যেন ক্রেতা-শুভানুধ্যায়ীরা আসেন। যাদের সঙ্গে এতদিন অনলাইনে কথা হয়েছে, তাদের সঙ্গে সামনাসামনি আলাপও হয়ে যাবে— এ মিলনমেলার জন্যই মূলত এত আয়োজন।

সারাবাংলা/টিআর

আড্ডা চলে পণ্য প্রদর্শনী মাইডাস সেন্টার