দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে হচ্ছে বিটাকের ৬ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র
১৫ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৩১
ঢাকা: দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে স্থাপন হচ্ছে বিটাকের ৬ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এজন্য গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, রংপুর, জামালপুর এবং যশোরে বিটাকের ৬টি কেন্দ্র স্থাপন শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৩২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শিল্পখাতে প্রশিক্ষিত জনবল সৃষ্টির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় শিল্পের জন্য কারিগরি জনবল সৃষ্টি, প্রত্যন্ত অঞ্চলের যুব নারী ও পুরুষ প্রশিক্ষাণার্থীদের জন্য আধুনিক সুবিধার কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য উপযোগী অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের জন্য স্থানীয় পর্যায়ে দক্ষ জনশক্তির প্রাপ্যতা নিশ্চিতকরণে কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
লক্ষ্যমাত্রা সম্পর্কে প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়, বিটাকের ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের জন্য ভবন নির্মাণ এবং আসবাবপত্র, প্রকৌশল, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করা হবে। ৬টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের মাধ্যমে নারী ও পুরুষদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ৬টি কেন্দ্রে বছরে ৬ হাজার ১৪৪ জন নারী ও ৬ হাজার ১৪৪ জন পুরুষ অর্থাৎ সর্বমোট ১২ হাজার ২৮৮ জন প্রশিক্ষণার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। ওয়ার্কশপ নির্মাণের মাধ্যমে ফলপ্রসু প্রশিক্ষণ ও আমদানি বিকল্প খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করা হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খান সারাবাংলাকে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধশালী দেশে রূপান্তরের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন একান্তই প্রয়োজন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে শিল্প কারখানায় দক্ষ জনবলের চাহিদা পূরণসহ বেকার জনশক্তির আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ৭ জুন অনুষ্ঠিত হয় পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা। ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়নের জন্য দক্ষ জনবল সৃষ্টি ছাড়া মুক্তবাজার অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। এ কারণে গতানুগতিক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরি দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি করা আবশ্যক।
২০১৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শিল্প মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করে নারী হোস্টেলসহ বিভাগীয় পর্যায়ে সাতটি ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন। বর্তমানে বিটাকের পাঁচটি কেন্দ্র ঢাকা, চট্টগ্রাম, চাঁদপুর, খুলনা এবং বগুড়ায় বিদ্যমান আছে। বিদ্যমান যুব জনশক্তির তুলনায় তা অপ্রতুল তাই স্থানীয় পর্যায়ে আরও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা প্রয়োজন।
এছাড়া গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, রংপুর, জামালপুর এবং যশোরে বিটাকের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হলে স্থানীয় পর্যায়ে দক্ষ জনবল সৃষ্টি এবং দেশের অভ্যন্তরে আমদানি বিকল্প যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব হবে। তাই স্থানীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের সঙ্গে সম্পর্ক জনশক্তি পাওয়ার ফলে উদ্যোক্তারা উৎপাদনমুখী শিল্পে বিনিয়োগে আগ্রহী হয়ে উঠবে।
শিল্প নীতি ২০১৬ সালে রফতানি বাজার ও দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদাপূরণে বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব শিল্প কারখানা ও শিল্প পার্কের জন্য প্রশিক্ষিত কর্মশক্তির প্রয়োজন হবে। প্রকল্পটি যুব নারী ও পুরুষদের লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দ্রব্যের মানের উন্নয়ন সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্রয়, আবাসিক ভবন, অনাবাসিক ভবন ও অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, প্রকৌশল ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয়, আসবাবপত্র, কম্পিউটার ও আনুষঙ্গিক অফিস সরঞ্জামাদি, ২টি মোটরযান, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উপকরণ ক্রয় এবং হোস্টেল ব্যবহারের জন্য দ্রবাদি যেমন, ক্রোকারিজ, বিছানাপত্র ইত্যাদি ক্রয় করা হবে।
সারাবাংলা/জেজে/এএম