Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কোটা বাতিলের প্রভাব পড়বে না বাংলাদেশে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জানুয়ারি ২০২২ ২২:০৮

ঢাকা: বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া ওই ঘোষণায় বলা হয়েছে, এখন থেকে নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে আসা সব আবেদনপত্র মূল্যায়ন শেষে সরকারের শর্তসাপেক্ষে যোগ্য কর্মীদের ভিসা দেওয়া হবে। মালয়েশিয়া সরকারের এই সিদ্ধান্তের কোনো প্রভাব বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রফতানির ক্ষেত্রে পড়বে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, কোটা না থাকায় বরং বাংলাদেশ শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে দরকষাকষি করতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

দুর্নীতি আর সিন্ডিকেটের অভিযোগে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। তিন বছর পর দেশটিতে ব্যাপক আকারে কর্মী পাঠাতে গত ১৯ ডিসেম্বর ফের সমঝোতা স্মারকে সই করা হয়। এতে দেশটিতে ফের বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর পথ সুগম হয়।

দীর্ঘ দিন পর বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানির অন্যতম শ্রমবাজার খোলার আগ মুহূর্তে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি হামজা জয়নুদ্দীন জানালেন, বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে আর কোনো কোটা থাকবে না। ঘোষণা অনুযায়ী, এখন থেকে নিয়োগকর্তাদের কাছ থেকে আসা প্রতিটি আবেদনপত্র মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়ন কমিটিতে পাঠানো হবে। সরকারের সব শর্ত মেনে যোগ্য কর্মীদের ভিসা দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন-

এ প্রসঙ্গে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য কোনো কোটা নেই, ছিলও না। আমরাও চাই কোনো কোটা না থাকুক। কারণ আমাদের কর্মীদের যোগ্যতা রয়েছে। কোটা না থাকলে আমরা দেনদরবার করে কর্মী পাঠাতে পারি। যারা কোটাভুক্ত, তাদের সব কিছু পূর্বনির্ধারিত থাকে, সেখানে বেতন-ভাতা নিয়ে কথা বলার সুযোগ থাকে না।

বিজ্ঞাপন

বিএমইটি মহাপরিচালক আরও বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়া। দেশটিতে আমাদের দেশের যোগ্য ও দক্ষ কর্মীরা দীর্ঘ সময় ধরে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। এই কোটা বাতিলে বাংলাদেশের জন্য কিছু যায় আসে না।

এদিকে, আগামী আগামী ২৮ জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নিয়োগের আবেদন শুরু হচ্ছে। এতে দেশটিতে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে প্ল্যান্টেশন খাতে জনবল নেবে মালয়েশিয়া। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মালয়েশিয়া এই খাতে ৩২ হাজার কর্মী বিদেশ থেকে নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। এর সিংহভাগই তারা বাংলাদেশ থেকে নিয়োগ দেবে।

এর আগে, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানি সম্পর্কিত যে সমঝোতা স্মারক সই হয় তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সব ব্যয় বহন করবেন নিয়োগকর্তা। এই খরচের মধ্যে রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় আনা, আবাসন, কাজে যোগদান এবং ওই কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর সব খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ইনস্যুরেন্স, কোভিড পরীক্ষা এবং কোয়ারেনটাইন সংক্রান্ত খরচও বহন করার কথা মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তার। পাশাপাশি কর্মীর বিমা ও চিকিৎসার বিষয়টিও নিয়োগকর্তাকে নিশ্চিত করার কথা বলা হয়।

দুই দেশের মধ্যেকার এই চুক্তির মেয়ার পাঁচ বছর। মেয়াদ শেষে দুই পক্ষ চাইলে মেয়াদ বাড়াতে পারবে। এর বাইরেও চুক্তিতে কর্মীর বেতন উল্লেখ, মেয়াদ, মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বেতন পরিশোধ ও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছে। তবে কোনো কর্মী অবৈধ কাজে লিপ্ত হলে নিজ খরচেই তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর বাংলাদেশ অংশের খরচ কর্মীকেই বহন করতে হবে। আর সেই খরচ নির্ধারণ করে দেবে বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

জনশক্তি রফতানি জনশক্তি রফতানি ব্যুরো বিএমইটি মালয়েশিয়া মালয়েশিয়ায় নিয়োগে কোটা মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার শ্রমবাজার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর