শেষ পর্যন্ত হুদার মতো কাউকেই সিইসি করবে: ফখরুল
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৩৭
ঢাকা: সার্চ কমিটি গঠন এবং সার্চ কমিটির বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের কাছে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যোগ্য নাম আহ্বান করার প্রক্রিয়াকে ‘মানুষের সঙ্গে প্রতারণা’ বলে মনে করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সার্চ কমিটির মাধ্যমে হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার আওয়ামী লীগের পছন্দেই মনোনীত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর পান্থপথে বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজকে দেখতে গিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল। পরে সেখান থেকে বের হলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সার্চ কমিটিকে ‘নতুন বোতলে পুরনো সুধা’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই যে সার্চ কমিটি— এ বিষয়ে আমি আগেও বলেছি, এটি ‘নতুন বোতলে পুরনো সুধ ‘ (ওল্ড ওয়াইন ইন দ্য নিউ বটল)। তারা (আওয়ামী লীগ) গত দুইবার যেভাবে করেছে (সার্চ কমিটি গঠন করে তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন গঠন), একটু খোলস লাগিয়ে আবারও একইভাবে করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা মানুষকে প্রতারণা করা যে আমরা সুন্দরভাবে করছি। আমরা সবার কাছ থেকে মতামত নিয়ে করছি। কিন্তু তারপর দেখা যাবে, হুদার (বর্তমান সিইসি কে এম নুরুল হুদা) মতো লোকজনকেই (সিইসি) করবে।
রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির বেশিরভাগ সদস্যই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ করে দেখবেন— এই সার্চ কমিটির মধ্যেও বেশিরভাগ লোকজনই আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এর মধ্যে একজন আছেন যিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন (নমিনেশন) চেয়েছিলেন। তারা যে এ ধরনের সার্চ কমিটি তৈরি করবে, আমরা সেটি আগে থেকেই জানি। আর জানি বলেই কিন্তু আমরা সার্চ কমিটি কিংবা রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার (রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশগ্রহণ) বিষয়ে না করে দিয়েছি।
সার্চ কমিটি বিভিন্ন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের কাছ থেকে ইসির জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম আহ্বান করেছে। বিএনপি সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম দেবে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির কাছে এর কোনো মূল্য নেই। এটি অর্থহীন। নাম দেওয়ার প্রশ্নই উঠতে পারে না। গত বারের অভিজ্ঞতা এবং তার তার আগেরবারের অভিজ্ঞতা থেকেও আমরা দেখেছি— এগুলো দিয়ে কোনো লাভ হয় না। সরকার ক্ষমতায় আছে, সেই সরকার তার পছন্দনীয় কমিশনই (নির্বাচন কমিশন) তৈরি করবে।
দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়— আবারও একই বক্তব্য তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আমরা এর আগেও সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমাদের বক্তব্য খুব স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য, আবার ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যা যা করা দরকার, তাই করছে। তারা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে একটি আইনও প্রণয়ন করে নিয়েছে। আমি আবারও বলছি, নির্বাচন কমিশন বা সার্চ কমিটি যাই হোক না কেন— নির্বাচন এই আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হলে গ্রহণযোগ্য হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না।
সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নতুন যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, সেই কমিশনের অধীনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি, ওই নির্বাচন হবে না। কারণ জনগণ ওই নির্বাচনে অংশ নেবে না।
বিআরবি হাসপাতালে বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী রুহুল কদ্দুস তালুকদার দুলুসহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর
কে এম নুরুল হুদা নির্বাচন কমিশন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সার্চ কমিটি