বাইডেন-পুতিন ফোনালাপ: হামলা হলে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাবে পশ্চিম
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০১:০০
ইউক্রেন সংকট নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফোনে আলোচনা করেছেন। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এক ঘণ্টার ওই ফোনালাপে জো বাইডেন ভ্লাদিমির পুতিনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালালে পশ্চিমা শক্তি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখাবে। একইসঙ্গে, যুদ্ধ হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে রাশিয়ার মর্যাদা হ্রাস পাবে বলেও পুতিনকে সতর্ক করেছেন বাইডেন। এ ফোনালাপের ব্যাপারে ক্রেমলিনের তরফ থেকে এখনও কোনো বিবৃতি আসেনি।
দুই নেতার এ ফোনালাপকে রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমা শক্তির সংঘাত এড়ানোর সর্বশেষ প্রয়াস হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাশিয়া যেকোনো সময় ইউক্রেনে আক্রমণ করতে পারে বলে ওয়াশিংটন ও তার মিত্রদের সতর্কবার্তার একদিন পর দুই নেতা ফোনে আলোচনা করলেন। বাইডেন প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ফোনালাপের সারাংশ প্রকাশ করেছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউক্রেন পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন দুই নেতা। জো বাইডেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র কূটনীতি ও ভিন্ন পরিস্থিতিগুলোর জন্য প্রস্তুত। তবে হোয়াইট হাউজের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন কূটনৈতিক পথে হাঁটবেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য যে, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো মনে করছে, ইউক্রেনে হামলার জন্য সবরকম প্রস্তুতি শেষ মস্কোর। যেকোনো সময় পূর্ণ হামলার আদেশ দিতে পারেন পুতিন। হামলা আশঙ্কায় ইউক্রেন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জাপানসহ ১২টি দেশ। এমন অবস্থায় পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করেন বাইডেন।
আরও পড়ুন-
- ইউক্রেনকে কি এবার বাঁচিয়ে দেবে রাসপুতিৎসা?
- ইউক্রেন থেকে কূটনীতিক প্রত্যাহার করল রাশিয়া
- আমেরিকার অস্ত্র প্রতিযোগিতার নিন্দা করলেন শি-পুতিন
- যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ৮ দেশের নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান
ইউক্রেন ইস্যুতে এর আগেও কয়েকবার ফোনালাপ করেছিলেন বাইডেন-পুতিন। গত ডিসেম্বরে দুই নেতা দুইবার ফোনে আলোচনা করেন। তবে ডিসেম্বরের পরে তারা আর কোনো আলোচনা করেননি। ডিসেম্বরের ফোনালাপে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশা করা হয়েছিল। তবে জানুয়ারি মাস জুড়ে ইউক্রেনের তিন দিকে কেবল শক্তি বৃদ্ধি করে আসছে মস্কো। ফলে কূটনৈতিক সমাধানের পথ দিন দিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, ইউক্রেন হামলা থেকে পুতিনকে নিবৃত্ত করতে উত্তেজনা প্রশমনের বার্তা নিয়ে গত সপ্তাহে রাশিয়া উড়ে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তবে ওই বৈঠকেও উল্লেখযোগ্য কোনো ফল আসেনি। তারও আগে, ইউক্রেন ইস্যুতে তিনবার পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন ম্যাখোঁ। মস্কো সফরের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গেও ৪০ মিনিট টেলিফোনে কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন
- ‘তাইওয়ান ইস্যুতে চীন-মার্কিন যুদ্ধ হতে পারে’
- রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠিয়েছে আমেরিকা
- চীন-তাইওয়ান, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত— ২ ফ্রন্টে যুদ্ধ করবে আমেরিকা?
প্রসঙ্গত, ইউক্রেন সীমান্তে লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন করেছে রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন সদস্য রাষ্ট্র ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগ না দেয় এমন নিশ্চয়তা দাবি করে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করছে মস্কো। ইউক্রেনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, রাশিয়া যে কোনো সময় সামরিক হামলা চালাতে পারে।
তবে রাশিয়া বরাবরই বলে আসছে, সামরিক হামলা চালানোর কোনো উদ্দেশ্য নেই। যদিও ইউক্রেন সীমান্তে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে অবস্থান করছে রুশ সামরিক বাহিনী। এছাড়া চলতি সপ্তাহে ভূমধ্যসাগর ও প্রতিবেশী বেলারুশে সামরিক শক্তি বাড়িয়েছে মস্কো—যা ইউক্রেনে হামলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি বলে মনে করছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো।
আরও পড়ুন-
- ন্যাটো কী এবং কখন কাজ করে
- ইউরোপের যেসব জায়গায় ন্যাটো বাহিনী মোতায়েন
- রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় পূর্ব ইউরোপে শক্তি বাড়াচ্ছে ন্যাটো
- রুশ হামলার সম্ভাব্য তারিখ জানালেন ইউক্রেনের শীর্ষ জেনারেল
সারাবাংলা/আইই
ইউক্রেন জো বাইডেন ন্যাটো বাইডেন-পুতিন বাইডেন-পুতিন ফোনালাপ ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া