Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৪৯ নারীসহ ৮৮৫ জওয়ানের সৈনিক জীবনে প্রবেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৪৩

ছবি: সারাবাংলা

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) থেকে: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ৮৮৫ জন জওয়ান সৈনিক জীবনে শুভ সুচনা করলেন। যাদের মধ্যে ৪৯ জন নারী সৈনিকও রয়েছেন। কুচকাওয়াচ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে অবস্থিত বিজিবি’র ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মুজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে সকাল ১০টায় নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিজিবি মহাপরিচালকসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা প্যারেড গ্রাউন্ডে উপস্থিত হলে বিজিটিসিঅ্যান্ডসি’র কমান্ড্যান্ট তাদের অভ্যর্থনা জানান। সকাল সাড়ে ১০টায় বিজিবি মহাপরিচালককে সশস্ত্র সালাম দেওয়ার মধ্য দিয়ে নবীন সৈনিকদের শপথ গ্রহণ ও প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।

উল্লেখ্য, ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের মৌলিক প্রশিক্ষণ গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। বিজিটিসিএন্ডসিতে প্রশিক্ষণ নেয়া মোট ৬৭০ জন রিক্রুট এর মধ্যে ৬২১ জন পুরুষ এবং ৪৯ জন নারী রিক্রুট প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও একই দিনে ও একই সময়ে চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন (৬বিজিবি)-এর প্রশিক্ষণ ভেন্যুতে ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের ২১৫ নবীন সৈনিকের মৌলিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ ২৪ সপ্তাহের অত্যন্ত কঠোর ও কষ্টসাধ্য এ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে বর্ণিত দুইটি ভেন্যুতে সর্বমোট ৮৮৫ জন নবীন সৈনিক আজ আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ ও সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে তাদের সৈনিক জীবনের শুভ সূচনা করলো। এবারের প্রশিক্ষণে বিজিটিসিএন্ডসিতে ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকার করে বক্ষ নম্বর-৪৪২ রিক্রুট (জিডি) নুরুল হুদা মামুন এবং চুয়াডাঙ্গায় ৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের সেরা চৌকস রিক্রুট হিসেবে ১ম স্থান অধিকার করে বক্ষ নম্বর-১১৮৩ রিক্রুট (জিডি) মো: জুবায়ের আলী।

বিজ্ঞাপন

৯৭তম রিক্রুট ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ শেষে বিজিবি মহাপরিচালক নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উপদেশ ও দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন। ভাষণের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎর্গকারী বিজিবি’র ৮১৭ জন অকুতোভয় বীর বিশেষ করে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সী আব্দুর রউফ ও শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহাম্মদ শেখসহ মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের জন্য এ বাহিনীর ৮ জন বীরউত্তম, ৩২ জন বীরবিক্রম এবং ৭৭ জন বীরপ্রতীক খেতাবে ভূষিত বীরদেরও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, কিংবদন্তির মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া এই বাহিনী সুনাম ও সাফল্যের পথ পরিক্রমায় সকলের প্রচেষ্টায় বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মর্যাদা লাভ করেছে। বিজিবি আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল ও পেশাদার দেশপ্রেমিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, সীমান্তে চোরাচালান, নারী ও শিশু পাচার রোধসহ সব ধরনের সীমান্ত অপরাধ দমনসহ দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সঙ্গে পালন করে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। এছাড়াও দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান, যেকোন দুর্যোগময় মুহূর্তে জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বিজিবি বিশ্বস্ততা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে সেবা ও কর্তব্য পরায়ণতার মাধ্যমে সমগ্র জাতির শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘প্রত্যেকের মনে রাখতে হবে শৃঙ্খলাই সৈনিকের মূলভিত্তি। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা ও কর্তব্যনিষ্ঠা, আনুগত্য ও নির্ভরযোগ্যতা, বুদ্ধিমত্তা ও কর্মতৎপরতা, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি।’ নবীন সৈনিকরা এসব গুণাবলির প্রতিফলন ঘটিয়ে বাহিনীর ঐতিহ্যকে সমুন্নত রাখবে বলে তিনি আশা করেন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর চারটি মূলনীতি-‘মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা’এ উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে বিজিবি’র উপর অর্পিত যেকোনো দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালন করে দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক ১৯৭৪ সালের ৫ ডিসেম্বর তৎকালীন বিডিআর’র ৩য় ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের চোরাচালান বিরোধী ও প্রেষণামূলক মূল্যবান বক্তব্যের কথা স্মরণ করে চোরাচালান রোধে নবীন সৈনিকদেরকে পেশাগত দক্ষতা অর্জনসহ ব্যক্তিগতভাবে সুদৃঢ়, সুশৃঙ্খল, নির্লোভ ও নির্ভীক সর্বোপরি উন্নত চরিত্রের অধিকারী হওয়ার উপদেশ দেন।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মহিয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বাহিনীর সুনাম, খ্যাতি বৃদ্ধিতে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।

সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে ডিজি বলেন, বিজিবির সাংগঠনিক কাঠামোতে ব্যাপক পরিবর্তন এনে একটি ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে উন্নীত করা হয়েছে। বিজিবি এখন জল, স্থল ও আকাশ পথে দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম।

সারাবাংলা/ইউজে/এনএস

টপ নিউজ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর